“ধীরে ধীরে সিন্ধু মুখে তিতি অশ্রুনীরে । চলে সবে, পুরি দেশ বিষাদ নিনাদে ব্যাখ্যা কর।
“ধীরে ধীরে সিন্ধু মুখে তিতি অশ্রুনীরে । চলে সবে, পুরি দেশ বিষাদ নিনাদে ব্যাখ্যা কর।
![]() |
“ধীরে ধীরে সিন্ধু মুখে তিতি অশ্রুনীরে । চলে সবে, পুরি দেশ বিষাদ নিনাদে ব্যাখ্যা কর। |
উত্তর মেঘনাদবধ কাব্যে লংকার রবি, রাবণের আশা-প্রত্যাশা, মায়ের দুলাল নিরত্ব মেঘনাদ লক্ষ্মণের অস্ত্রাঘাতে মৃত্যুবরণ করে। মেঘনাদের মৃতদেহ সৎকারে নেবে, পতিপ্রাণা প্রমীলা সহমরণে যাবে।
দু'জন একই পালকিতে আরোহণ করেছে। মেঘনাদের মৃতদেহ ফুলে ফুলে সজ্জিত। প্রচণ্ড ঝড়ে যেমন গাছের ফুলগুলো উড়ে এখানে ওখানে নিক্ষিপ্ত হয়, তেমনি মেঘনাদের শবযাত্রায় স্বর্ণমুদ্রা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বর্ণনির্মিত পালকিতে মেঘনাদের শব নিয়ে প্রমীলা বসে আছে- দেহ তার ফুলে ঢাকা। মনে হচ্ছে পৃথিবীতে মৃতকামদেবকে নিয়ে রতি চলেছে সহমৃতা হতে। প্রমীলা তার মৃত স্বামী মেঘনাদকে নিয়ে এমন মৌন শান্ত নিস্তব্ধ বসে আছে, দেখে মনে হচ্ছে প্রমীলার সুন্দর দেহ ছেড়ে তার প্রাণ চলে গেছে সেখানে, যেখানে তার স্বামীর প্রাণ গেছে।
শ্রীকৃষ্ণ গোকুল ছেড়ে গেলে সেখানে যে বেদনাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, তেমনি মেঘনাদ লংকা অন্ধকার করে চলে গেলে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় লংকার আবালবৃদ্ধবনিতা কাঁদতে কাঁদতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে।
ঢোল কাশি বাঁশি নিয়ে বাদ্যকররা বেদনার সুরধ্বনি তোলে, শত সহস্র রক্ষ সৈন্য যাত্রায় শামিল হয়। রাবণ অশ্রুসিক্ত হয়ে ধুতুরার মালা গলে শবযাত্রায় শামিল হয়। ধীর পদক্ষেপে অশ্রুসিক্ত নয়নে বেদনাদীর্ণ বিষাদে সবাই মেঘনাদের সৎকারের উদ্দেশ্যে সিন্ধু অভিমুখে যাত্রা করে ।