তোমার মন্দিরে এ কী নূতন সংগীত ধ্বনিয়া উঠিল আজি নতুন সংগীতের স্বরূপ তুলে ধর
তোমার মন্দিরে এ কী নূতন সংগীত ধ্বনিয়া উঠিল আজি নতুন সংগীতের স্বরূপ তুলে ধর
![]() |
তোমার মন্দিরে এ কী নূতন সংগীত ধ্বনিয়া উঠিল আজি নতুন সংগীতের স্বরূপ তুলে ধর |
উত্তর :রঘুপতি দেবী কালীর উপাসক। জয়সিংহ তারই ভক্তবৎসল শিষ্য। যুগ যুগ ধরে দেবী কালীর পায়ে বছরে বছরে শত শত প্রাণ বলি দেওয়া হয়- এটা প্রথা হিসেবে চলে আসছে। বলিদানের ব্যত্যয় হয় নি কোনদিন, এর বিরুদ্ধে কোন মতবাদ থাকতে পারে তা কারও মনে কখনও উদয় হয় নি।
কিন্তু দরিদ্রকন্যা অপর্ণার সন্তানতুল্য দুটি ছাগশিশু বলি দেওয়ার পর সে সজল নয়নে সন্তানতুল্য ছাগশিশুর জন্য রাজ দরবারে ফরিয়াদ জানায়। তার ব্যথায় ব্যথাতুর রাজা এবং মন্দির সেবক জয়সিংহ। জয়সিংহের কাছে এ ঘটনা অভূতপূর্ব। যে হৃদয় এতদিন দেবীর পাদপদ্মে রক্ত প্রদানে উৎফুল্ল, সে আজ অপর্ণার বেদনায় মূহ্যমান।
অপর্ণার বাৎসল্যপ্রীতি জয়সিংহের চোখে নতুন আলো প্রদান করে। তার মনেও প্রশ্ন জাগে কেন এ হত্যা, জগৎমাতা কেন এত নিষ্ঠুর। অথচ মানবমাতার (অপর্ণা) হৃদয়ে অপরিসীম স্নেহ-মমতা। অপর্ণার এ বেদনা জয়সিংহের এতদিনের বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত হানে।
বিশ্বাসে ফাটল ধরে। দেব মন্দিরে হত্যার পরিবর্তে চোখের জল— এ অভিজ্ঞতা জয়সিংহের কাছে নতুন। এ মানবিকতা জয়সিংহের ভিতরের ঘুমন্ত মানবতাকে জাগিয়ে তোলে। মানবের করুণ কাতর কণ্ঠস্বরে জয়সিংহের ভিতরের মানুষটি কেঁপে ওঠে। নড়বড়ে হয়ে যায় প্রথাধর্মের উপরকার বিশ্বাস। সে বিমুগ্ধ বিস্ময়ে হতবাক — নতুন পথের সন্ধান পায় ।