রত্নসেনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

রত্নসেনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
রত্নসেনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
রত্নসেনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।

উত্তর:চিতোরের রাজা চিত্রসেনের পুত্র রত্নসেন । রত্নসেন যেমন রূপে-গুণে অনবদ্য, তেমনি অস্ত্রচালনায় বিশেষ পারঙ্গম। শুকপাখির পাণ্ডিত্য দেখে লক্ষ টাকা দিয়ে রত্নসেন হীরামনকে কিনে নেয়। রাজা শিকার থেকে ফিরে শুককে না পেয়ে ক্রুদ্ধ হয়। দাসীর সহযোগিতায় শুককে পেয়ে তার মুখে পদ্মাবতীর রূপ বর্ণনা শুনে রত্নসেন ব্যাকুল হয় এবং অজ্ঞান হয়। 

রাজা যোগীবেশে দুর্গম পথ অতিক্রম করে কলিঙ্গ দেশে পৌঁছায়, সেখান থেকে গজপতির কাছ থেকে নৌকা নিয়ে বিভিন্ন দ্বীপ অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত সিংহল পৌঁছায়। মহাদেবের মন্দিরে যপ-তপ করে। বসন্ত পঞ্চমীতে পদ্মাবতীকে দেখে সে মূর্ছিত হয়। মূর্ছা ভাঙার পর শিবের সহযোগিতায় গন্ধর্বরাজের কাছে পৌঁছে পদ্মাবতী লাভের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে। 

ইতোমধ্যে হীরামনের কাছে জানতে পায় পদ্মাবতীর মরণ বাঁচন, রত্নসেনের হাতে। কিন্তু গন্ধর্বসেনের কারণে তাকে যুদ্ধ করে জয়ী হয়ে পদ্মাবতীকে পেতে হয়। এক পাখির কাছে নাগমতির বেদনার কাহিনি শুনে পদ্মাবতীকে নিয়ে রত্নসেন চিতোর ফিরতে পথে সমুদ্রে ঝড়ে পড়ে, জল রাক্ষসের হাতে বন্দি হয় এবং এক সমুদ্র পাখি তাকে উদ্ধার করে ।

 ভাঙা নৌকার তক্তায় করে ভাসতে ভাসতে কূলে এলে লক্ষ্মী পদ্মাবতী সেজে তাকে পরীক্ষা করে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পদ্মাবতীসহ চিতোর ফেরে। দুই রানি নিয়ে সুখে দিন কাটায়— দুই রানির গর্ভে দুই পুত্র জন্ম নেয়- নাগমনির গর্ভে নাগসেন ও পদ্মাবতীর গর্ভে কমলসেন ।

রাঘর পণ্ডিতের অপকৌশলের কারণে রত্নসেন তাকে নির্বাসন দণ্ড দেয়। অপমানিত পণ্ডিত বাদশা আলাউদ্দিনের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেয় ।

রত্নসেনের সারল্যের কারণে আলাউদ্দিন সুকৌশলে রত্নসেনকে বন্দি করে দিল্লী নিয়ে যায়। গোরা ও বাদলের সহযোগিতায় পদ্মাবতী সুকৌশলে রত্নসেনকে উদ্ধার করে। দেবপালের দৃষ্টতার কথা শুনে রত্নসেন তার সাথে দ্বৈরথ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে দেবপালকে হত্যা করে কিন্তু রত্নসেন আহত হয় এবং অল্পদিনের মধ্যে মারা যায়। মূলত রত্নসেনের অস্তিত্বের অভিজ্ঞান তার সততা, সারল্য এবং শৌর্যবীর্য।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ