রসুলবিজয় কী আলোচনা কর
রসুলবিজয় কী? আলোচনা কর।
![]() |
রসুলবিজয় কী? আলোচনা কর। |
উত্তর: বাঙলা কাসাসুল আম্বিয়া, রসুলচরিত ও রসুল বিজয় বারোশ সাতষটি বাংলা সনে (১৮৬০ খ্রিঃ) বটতলা থেকে একটি কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। প্রকাশক কাজী সফিউদ্দিনের প্রবর্তনায় হুগলীর শায়ের রেজাউল্লাহ উর্দু থেকে এ গ্রন্থে বাঙলায় তর্জমা শুরু করেন।
নূহ নবীর কাহিনী কিছুটা লেখার পর রেজাউল্লাহর মৃত্যু হয়। পরে কলকাতার আমীরউদ্দীন এ কাজে হাত দেন। আবু তালেবের সাথে হযরত মুহম্মদ (স) শামদেশে বাণিজ্য যাত্রা পর্যন্ত আমীরউদ্দীন অনুবাদ করেন। বাকিটুকু সম্পন্ন করেন কবি আশরাফ।
সৈয়দ সুলতানের নবীবংশ থেকে এ গ্রন্থ কলেবরে অনেক বড়। নবীবংশে সব নবীর কাহিনী নেই। কিন্তু এখানে নবীবংশের নবীদের কথা ছাড়াও আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নবীদের কথা আলোচিত হয়েছে। যেমন- হুদ, সিকান্দর, ইসমাইলের কোরবানী, ইয়াকুব, ইউসুফসহ চার খলিফার বর্ণনা রয়েছে। আলীর ওফাৎ অবধি কাব্য সমাপ্ত ।
রসুলবিজয়েও সৃষ্টি পতন দিয়ে শুরু। মুহম্মদ (স) আদি সৃষ্টি। তবে এখানে বলা হয়েছে পৃথিবীর আদি বাসিন্দা জিনেরা আগুনে তৈরি। এ গ্রন্থে স্থানে স্থানে আয়াত উদ্ধৃত হয়েছে। এর উৎস কুরআন বলে দাবি করা হয়েছে।
জনাব আলী : জনাব আলী উর্দু তর্জমা অবলম্বনে কিসাসুল আম্বিয়া রচনা করেন। তাঁর গ্রন্থে ইমাম জাফর সাদেক, রাবিয়া বসরী, ইব্রাহিম আদহাম, বায়েজিদ বোস্তামী, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শফী, ইমাম আহমদ হাম্বল প্রমুখ দরবেশ ও ইমামদের জীবনকথা ও কীর্তি বর্ণিত হয়েছে।
মুহম্মদ খাতের ঃ মুহম্মদ খাতের মূলত দোভাষী শায়েরের লেখক। তিনি উনিশ শতকের মধ্যভাগের লোক। তিনি মেরাজনামা ও কাসাসুল আম্বিয়া লিখেছেন। তাঁর কাসাসুল আখিয়া উর্দু তর্জমার বঙ্গানুবাদ।
শেখচান্দ ঃ শেখচাদ ছোট ফেনী নদীর তীরবর্তী শেখ চাঁদপুরের অধিবাসী ছিলেন। এখানে কবির বংশধররা আজও বিদ্যমান। শেখচাদের (শতের সতক) রসুলনামা বা রসুলবিজয় নবীবংশের আদলে রচিত। এটি কেবল হযরত মুহম্মদেরই চরিতগ্রস্থ। এতে সৈয়দ সুলতানের নবীবংশের মতই সৃষ্টি পতন বর্ণিত হয়েছে। শেখচাদও তাঁর কাব্য বাঙালির
সমাজ-সংস্কারের আদলে রচনা করেছেন।
মুহম্মদ ছবি এবং উনিশ শতকের প্রথম পাদে গোলাম রসুল ও বুরহান উল্লাহ রসুলচরিত রচনা করেন ।