মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

 মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও
 মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও

অথবা, “ঘুরোপ-প্রবাসীর পত্র' অবলম্বনে আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা কর।

উত্তর : যুরোপ প্রবাসীর পত্র' ভ্রমণ সাহিত্যের প্রথম পত্রেই রবীন্দ্রনাথ বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে মিশরের বিখ্যাত শহর আলেকজান্দ্রিয়া সম্বন্ধে বর্ণনা করেছেন। সুয়েজ ভ্রমণের পর লেখক দীর্ঘ ধূলির সমুদ্র আর নানা প্রতিকূলতা রেলগাড়িতে বিভিন্ন পেরিয়ে আলেকজান্দ্রিয়া শহরে এসে পৌঁছালেন। সুয়েজে এসে তাঁরা রেলগাড়িতে উঠেন। এ প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন লেখক।

চুলে হাত দিতে গিয়ে দেখা গেল চুলে এমন এক স্তর মাটি জমেছে যে, মাথায় অনায়াসে ধান চাষ করা যায়। এরকম ধুলোমাখা সন্ন্যাসীর বেশে তাঁরা আলেকজান্দ্রিয়াতে গিয়ে পৌঁছলেন। রেলের লাইনের দু-ধারে সবুজ শস্যক্ষেত্র। 

জায়গায় জায়গায় খেজুরের গাছে থোলো থোলো খেজুর ফলে রয়েছে। মাঠের মাঝে মাঝে কুয়া। মাঝে মাঝে দুই-একটা কোঠাবাড়ি-বাড়িগুলো চৌকোণা, ঘাম নেই, বারান্দা নেই সমস্তটাই দেয়ালের মতো, সে দেয়ালের মধ্যে মধ্যে দুই-একটা জানালা। 

এসব কারণে বাড়িগুলোর যেন শ্রী নেই। লেখক আগেই আফ্রিকার মাথা থেকে পা পর্যন্ত যেরকম অনুর্বর মরুভূমি মনে করে রেখেছিলেন, বাস্তবে তার কিছুই মনে হলো না। চারদিককার সে হরিৎ ক্ষেত্রের উপর খেজুরকুঞ্জের মধ্যে প্রভাতটি লেখকের অতি চমৎকার লেগেছিল।

আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরে তাঁদের জন্য ‘মঙ্গোলিয়া' স্টিমার অপেক্ষা করছিল। এবার যাত্রীরা ভূমধ্যসাগরের বক্ষে আরোহণ করলেন। লেখকের একটু শীত শীত করতে লাগল। জাহাজে গিয়ে খুব ভালো করে স্নান করলেন, রবীন্দ্রনাথের তো হাড়ে হাড়ে ধুলা প্রবেশ করেছিল। 

স্নান করার পর আলেকজান্দ্রিয়া শহর দেখতে গেলেন। জাহাজ থেকে ডাঙা পর্যন্ত যাবার জন্য একটা নৌকো ভাড়া হলো। এখানকার এক একটা মাঝি স্যার উইলিয়াম জোনসের দ্বিতীয় সংস্করণ বললেই হয়।

শোনা গেল ফ্রেঞ্চ ভাষাই এখানকার সাধারণ ভাষা। রাস্তাঘাটের নাম, সাইনবোর্ডে দোকানগুলোর আত্মপরিচয়, অধিকাংশই ফরাসি ভাষায় লেখা। আলেকজান্দ্রিয়া শহরটি সমৃদ্ধিশালী মনে হলো। এখানে কত জাতের লোক ও কত জাতের দোকানবাজার আছে তার ঠিকানা নেই। রাস্তাগুলো পাথর দিয়ে বাঁধানো। তা বেশ পরিষ্কার থাকে। 

কিন্তু গাড়ির শব্দ বড় বেশি রকম হয়। খুব বড় বড় বাড়ি, বড় বড় দোকান, শহরটি খুব জমকালো বটে। আলেকজান্দ্রিয়ার বন্দর খুব প্রকাণ্ড। বিস্তর জাহাজ এখানে আশ্রয় পায়। য়ুরোপীয়, মুসলমান সকল প্রকার জাতিরই জাহাজ এ বন্দরে আছে, কেবল হিন্দুদের জাহাজ নেই।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ