লঙ্কাপুরীর বর্ণনা দাও
লঙ্কাপুরীর বর্ণনা দাও।
![]() |
লঙ্কাপুরীর বর্ণনা দাও |
উত্তর:মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যে দূতমুখে বীরবাহুর মৃত্যুখবর পেয়ে রাবণ পারিষদ সাথে প্রাসাদ শিখরে উঠলে রাবণের চোখে পড়ে স্বর্ণসৌধ কিরিটিনী লঙ্কা। লঙ্কার সারি সারি পুষ্পদল মাঝে স্বর্ণদেউল শোভা পায়। সরোবরে প্রস্ফুটিত পদ্ম, ঝরনার জলের উপর সূর্যচ্ছটা পড়ে ঝলমল করে। তরুরাজি আচ্ছাদিত লঙ্কার ফুলে ফুলে ভরা- যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
সবকিছু মিলে লঙ্কা যেন যুবতীর সাজে সেজে থাকে। লঙ্কার দেবগৃহগুলোর চূড়া হীরক নির্মিত দোকানগুলো বিচিত্র রঙের ও ঢঙের। বিবিধ রত্নপূর্ণ লঙ্কা। জগতের নানা দিক থেকে বিচিত্র সৌন্দর্যমণ্ডিত ধনসম্পদ এনে যেন লঙ্কাকে সুন্দরীর সাজে সাজানো হয়েছে। লঙ্কাকে পূজা করতে চারিদিকে যেন এত আয়োজন। লঙ্কার চারদিকে পর্বততুল্য সুউচ্চ প্রাচীরবেষ্টিত। স্বর্ণলঙ্কা স্বর্গের চেয়েও ঐশ্বর্য ও সৌন্দর্যমণ্ডিত। লক্ষ্মণ বিভীষণের সাথে পুরীর প্রাচীরে উঠে লঙ্কার রূপ দেখে সে বিস্মিত হয়। লঙ্কা শুধু মর্তের অমরাবতী নয়, এর সাথে মিশে আছে অপার্থিব সৌন্দর্য।
লক্ষণ দেখে-
শত শত হেম হৰ্ম্ম, দেউল, বিপণি উদ্যান সরসী, উৎস, অশ্ব অশ্বালয়ে, গজলিয়ে গজবৃন্দ, স্যন্দন অগণ্য অগ্নিবর্ণ অস্ত্রশালা, চারু নাট্যশালা। মণ্ডিত রতনে ।
লঙ্কায় সারি সারি কাঞ্চনহীরকস্তম্ভ, গগন পরশে
গৃহচূড় । হস্তিদন্ত স্বর্ণকান্তিসহ
শোভিছে গরাক্ষে, দ্বারে।
তাই লক্ষ্মণ স্বীকার করেছে- এ হেন বিভব, আহা, কার ভবতলে' এবং সে বলেছে-
‘লঙ্কার বিভব যতকে পারে বর্ণিতে'।
লক্ষ্মণ যথার্থই বলেছে- লঙ্কার রূপ অনির্বচনীয়।