চর্যাপদ আবিষ্কারের কাহিনী বর্ণনা করো
চর্যাপদ আবিষ্কারের কাহিনী বর্ণনা কর।
![]() |
চর্যাপদ আবিষ্কারের কাহিনী বর্ণনা কর। |
উত্তর: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনতম উল্লেখযোগ্য মহামূল্যবান রত্ন চর্যাপদ। সুপণ্ডিত ও সমালোচকদের মতানুসারে এর প্রকৃত নাম 'চর্যাচর্যবিনিশ্চয়'।
পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিংহের পুত্র রাধাকিষণ ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সকল ভাষার পুঁথি সংরক্ষণের জন্য লর্ড লরেন্সকে অনুরোধ জানান। লরেন্স প্রাদেশিক গভর্নরদের সাথে পরামর্শ করে পুঁথি সংগ্রহের ব্যবস্থা করেন।
বংগীয় এশিয়াটিক সোসাইটি ডঃ রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সাহায্যে পুঁথি সংগ্রহের কাজ শুরু করে। তাঁর মৃত্যুতে ১৮৯১ -এ মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর উপর এ কাজের ভার পড়ে। বৌদ্ধধর্ম ও বাঙলার বৌদ্ধ সাহিত্য সম্পর্কে তার জানার আগ্রহের কারণে তিনি নেপাল যান ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে।
ডাকার্ণব, সুভাষিত সংগ্রহ, দোহাকোষ, পঞ্জিকা ইত্যাদির নকল তিনি নেপাল থেকে সংগ্রহ করেন। ১৯০৭ সালে আবার নেপাল যান।
সেখানে 'চর্যাচর্য বিনিশ্চয়', দোহাকোষ ইত্যাদির নকল নিয়ে আসেন। ১৯১৬ সালে তারই সম্পাদনায় 'হাজার বছরের পুরানো বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা' নামে গ্রন্থ বের করেন। এ গ্রন্থের অন্তর্গত বাংলা ভাষায় রচিত গ্রন্থই চর্যাপদ।
গ্রন্থটির ভাষা নিয়ে নানা বিতর্ক দেখা দেয়। হিন্দি, মৈথিলী, উড়িয়া, আসামি সবাই দাবি করে যে গ্রন্থটি তাদের নিজ নিজ ভাষায় লিখিত। অতঃপর ভাষাতাত্ত্বিক ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সাহেব প্রত্যেক ভাষার ব্যাকরণ ধরে ধরে প্রমাণ করেন যে চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।