তালতলির হাট মালুর কাছে বিশ্বের মেলা মনে হয় কেনা— ব্যাখ্যা কর
তালতলির হাট মালুর কাছে বিশ্বের মেলা মনে হয় কেনা— ব্যাখ্যা কর।
![]() |
তালতলির হাট মালুর কাছে বিশ্বের মেলা মনে হয় কেনা— ব্যাখ্যা কর |
উত্তর : বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত জীবন নিয়ে এবং অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধে অনুপ্রাণিত প্রথম সার্থক সৃষ্টি শহীদুল্লা কায়সারের 'সংশপ্তক' উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মালু।
মালু গণি বয়াতির দল ছেড়ে তালতলির বাজারে রামদয়ালের দোকানে কাজ নেয়। এরপর শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধের সময় তালতলি গ্রামটা হয়ে পড়ে জনশূন্য; কিন্তু তালতলির বাজার মানুষের ভিড়ে, বেচাকেনার ঘুমে জমজমাট হয়ে পড়ে।
কত কুলিমজুর কাজ করে চলে আশপাশের রাস্তায়, সামরিক ঘাঁটিতে। কন্ট্রাক্টর, ওভারসিয়ার, বিল বাবু, গুদাম বাবু- সাহেব আর বাবুর অন্ত নেই। চায়ের স্টলগুলো দিনরাত্রি সরগরম থাকে। দিন রাত সেখানে গাড়ির চলাচল থাকে। ছোটো-বড়ো মাঝারি হরেক রকমের গাড়ি চলে।
তালতলির বাজারে রকমারি ভাষা আর মানুষগুলোর বিচিত্র ঢং দেখা যায়। কারো রং সাদা, কদুর বুকের মতো। কারো বা পাকা কলার মতো স্বর্ণাভ। কেউ বা বটফলের মতো লাল। আর এক দল মিশমিশে কালো, যেন হাঁড়ির তলা। কেউ বাঁদরমুখো। কেউ শিয়ালমুখো।
কেউবা ছবির মুখের মতোই সুন্দর। কিন্তু এক মুহূর্ত স্থিরতা নেই কারো। তালতলির বাজারে ছাউনির পর ছাউনি পড়ে। উঠে যায় সব ছাউনি। আবার বসে সব ছাউনি। এইসকল জিনিসগুলো প্রত্যক্ষ করে মালুর কাছে মনে হয়েছে- 'তালতলির হাট যেন বিশ্বের মেলা।'