বিভীষণকে মেঘনাদের ভর্ৎসনার কারণ ও স্বরূপ ব্যাখ্যা কর

 বিভীষণকে মেঘনাদের ভর্ৎসনার কারণ ও স্বরূপ ব্যাখ্যা কর

বিভীষণকে মেঘনাদের ভর্ৎসনার কারণ ও স্বরূপ ব্যাখ্যা কর।

 বিভীষণকে মেঘনাদের ভর্ৎসনার কারণ ও স্বরূপ ব্যাখ্যা কর।


উত্তর বিভীষণের সহযোগিতায় লক্ষ্মণ মেঘনাদের যজ্ঞগৃহে প্রবেশ করার পরও প্রথমে মেঘনাদ বিশ্বাস করতে পারে নি। কিন্তু যজ্ঞগৃহদ্বারে চাচা বিভীষণকে দেখে মেঘনাদ বুঝতে পারল যে, বিভীষণই লক্ষ্মণকে পথ দেখিয়ে এনেছে। মেঘনাদ তখন চাচাকে মিঠাকড়া ভর্ৎসনা করেছে।

মেঘনাদ বলেছে যে, নিকষা সতীর গর্ভে যার জন্ম, রাক্ষসশ্রেষ্ঠ রাবণ যার অগ্রজ, কুম্ভকর্ণের মত মাতৃভক্ত বীর যার ভাই, বাসব বিজয়ী মেঘনাদের মত বীর যার ভ্রাতুষ্পুত্র— সেই বিভীষণের উচিত হয় নি লক্ষ্মণের মত হীন রাঘবকে নিজগৃহের পথ চিনিয়ে আনা। উজ্জ্বল দীপ্ত বংশে জন্মে বিভীষণের উচিত হয় নি রাঘবের দাসত্ব করা। 

কেননা আকাশের চাঁদ কি কখনো মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি যায়? বিভীষণ কী করে ভুলে গেল তার বংশ পরিচয়। তাছাড়া রামের মত নীচ বংশের মানুষের সাথে তার সম্পর্কই বা কীভাবে গড়ে উঠল। রাজহংস কী কখনো পঙ্কজ কানন ফেলে শৈবালে সাঁতার কাটে? সিংহ কী কখনো শৃগালের সাথে বন্ধুত্ব করে। 

বিজ্ঞ বিভীষণ নিশ্চয়ই বংশমর্যাদা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, ফলে অস্ত্রাগারের পথ ছেড়ে দিক, মেঘনাদ লক্ষ্মণকে যজ্ঞগৃহে অনধিকার প্রবেশের শান্তি দিক। কিন্তু বিভীষণ পথ না ছাড়লে মেঘনাদ বলেছে — বিভীষণ কোন ধর্মে, কোন বুদ্ধিতে জ্ঞাতিত্ব, ভ্রাতৃত্ব জলাঞ্জলি দিয়েছে। 

বিভীষণ তো ভাল করেই জানে যে, সকল শাস্ত্রেই বলা আছে নির্গুণ আত্মীয় গুণবান অনাত্মীয়ের চেয়ে শ্রেয়। কিন্তু বিভীষণ আজ নীচ ও হীন রাঘবের সাথে মিশে সবই ভুলে গেছে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ