ভুসুকুপা কে ছিলেন ? তাঁর পরিচয় দাও

ভুসুকুপা কে ছিলেন? তাঁর পরিচয় দাও

অথবা, ভুসুকুপা চর্যাপদের দ্বিতীয় সর্বাধিক পদ রচয়িতা- এ কথার সত্যাসত্য যাচাই কর ৷ 
অথবা, চর্যাদের কোন কবির মধ্যে বাঙালি জীবনের প্রতিচ্ছবি পরিলক্ষিত হয় সংক্ষেপে লেখ ৷

ভুসুকুপা কে তাঁর পরিচয় দাও
ভুসুকুপা কে? তাঁর পরিচয় দাও

উত্তর : চর্যাপদ বৌদ্ধতান্ত্রিক সাধন সংগীত। এটি একটি গীতিকা। সুতরাং চর্যাগীতিকার পদকর্তাদের দ্বিতীয় সর্বাধিক পদকর্তা ভুসুকুপা। 

তিনি সর্বাধিক আটটি পদ রচনা করেছেন যথা : ৬, ২১, ২৩, ২৭, ৩০, ৪১, ৪৩, ৪৯। সৌরাষ্ট্রের ক্ষত্রিয় রাজপুত্র ভুসুকুপা সহজিয়া বৌদ্ধধর্ম বা তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে নিজ বংশ পরিচয় নামধাম পরিত্যাগ করে ছদ্মনাম গ্রহণ করেছেন। ভুসুকুপা প্রথম দিকে ছিলেন অলস প্রকৃতির। 

ভুক্তির (ভু) সুপ্তি (সু) কুটিরে (কু) অবস্থান ছাড়া কিছু করতেন না বলে তাকে ভুসুক বলা হতো। তাঁর প্রকৃত নাম শান্তি দেব। সৌরাষ্ট্রের ক্ষত্রিয় রাজপুত্র ভুসুকু বাঙালি ছিলেন (আজি ভুসুকু বাঙালী ভইলী) বলে এই চরণ থেকে প্রমাণিত।

কিন্তু তিনি নিজেকে বাউতু বলে উল্লেখ করেছেন। সুকুমার সেন এবং হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মঞ্জুশ্রীর উপাসক শান্তিদেব ও ভুসুকুকে অভিন্ন ভেবেছেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ভুসুকুকে পূর্ব বাংলার বলে দাবি করেছেন। কারণ তাঁর ৪৯নং পদে পদ্মা (পঁউঅ) ফলের নাম আছে। 

বঙ্গাল দেশ বঙালির কথা আছে। যেখানে তাঁর বাঙালি জীবনের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তাঁর বাড়ি সম্ভবত বৃহত্তর যশোরে। তারানাথের মতে তিনি খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকের লোক কিন্তু চর্যার ভুসুকু এতো প্রাচীন হতে পারেন না। কারণ তার চর্যাসমূহ সন্ধ্যা সংকেতময় ও পরিভাষা কণ্টকিত। 

সম্ভবত তিনি অষ্টম থেকে এগার শতকের কবি। ভুসুকুর পদে আমরা যে বাঙালি জীবন চিত্রের পরিচয় পাই তা তাঁর ৬নং পদে প্রমাণিত

কাহেরে ঘিনি মেলি আছহুঁ কীস ।

বেঢ়িল হাক পড়ই চৌদীস অপনা মাংসে হরিণা বৈরী ।

খনহন ছাড়ই ভুসুক অহেরী।

সুতরাং তাঁর এই পদ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি বাঙালি ছিলেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ