ঠাকুরমার ঝুলি'র দেড় আঙুলের জন্ম-বৃত্তান্ত লেখ
ঠাকুরমার ঝুলি'র দেড় আঙুলের জন্ম-বৃত্তান্ত লেখ
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম বিশিষ্ট অংশ লোকসাহিত্য। বৈচিত্র্যে ও ব্যাপকতায় এবং জীবনের সঙ্গে একাত্মতায় উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে তা সমাদৃত। বাংলা লোকসাহিত্যের অঙ্গনে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের 'ঠাকুরমার ঝুলি' একটি বিশেষ স্থান জুড়ে আছে। “
ঠাকুরমার ঝুলি'র সমান জনপ্রিয় গ্রন্থ আর দ্বিতীয়টি নেই। দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ছিলেন অসাধারণ শক্তিশালী কথাকার। তাঁকে বলা হয় রূপকথার সম্রাট। তাঁর গল্পগুলো শিশুকিশোর মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।
নিম্নে 'ঠাকুরমার ঝুলি'র দেড় আঙুলের জন্ম-বৃত্তান্ত তুলে ধরা হলো ।এক কাঠুরিয়ার কোন সন্তান হয় না। মানুষে তাকে আঁটকুরে বলে। কাঠুরিয়ার বউ মা ষষ্ঠীর তলায় আকুতি মিনতি করে সন্তান লাভের জন্য। এক রাতে মা ষষ্ঠী তাকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলে :“তেল সিঁদুরে নাবি ধুবি, শশা পা’বি শশা খাবি ।
কোলে পাবি সোনার পুত বুকজুড়ানো মাণিক পুত।"খুব ভোরে উঠে কাঠুরে বউ এক কপাল সিঁদুর আজলপূরা তেল মাথায় দিয়ে ষষ্ঠীর ঘাটে গিয়ে ডুব দিয়ে আসল। এদিকে কাঠুরিয়া বনে গেল কাঠ কাটতে।
বনে একশ বছরের এক খুনখুনে বুড়ির দেখা পায় কাঠুরিয়া। সেই বুড়ি কাঠুরিয়াকে একটি শশা দিয়ে বলে-এই নে বাছা, এই টে নিয়ে বউকে দিস, কিছু যেন ফেলে না, সাতদিন পরে যেন খায়-দেখবে চাঁদপনা টলটল ছেলে আসবে তোমার ঘর আলো করে।
বাড়িতে এসে কাঠুরিয়া বউকে শশাটি দিয়ে বলে এটি ষষ্ঠী মায়ের বর। সিকেয় তুলে রাখ, সাতদিন পরে খাবে। কিন্তু কিছু যেন ফেলতে মানা এ কথাটি বলতে ভুলে গেল।
কাঠুরিয়ার বউ মনের আনন্দে শশাটি খেয়ে বোঁটা ফেলে দিল । এই ভুলের কারণে কাঠুরে বউ এর এক ‘দেড় আঙ্গুলে' ছেলের জন্ম হলো।