রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ছড়া কাকে বলে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ছড়া কাকে বলে
![]() |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় ছড়া কাকে বলে |
উত্তর : লোকসাহিত্যের প্রাচীনতম সৃষ্টি ছড়া। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছড়া বলতে বুঝিয়েছেন “ছড়াগুলো আমাদের নিয়ত পরিবর্তিত অন্তরাকাশের ছায়ামাত্র, তরল স্বাচ্ছ সরোবরের উপর মেঘক্রীড়িত নভোমণ্ডলের ছায়ার মতো।”
তিনি আরও বলেছেন : “ছড়ার একটা স্বতন্ত্র রাজ্য আছে, সেখানে কোনো আইনকানুন নেই- মেঘরাজ্যের মতো।” কবি মনে করেন ছড়ার মধ্যে একটি চিরত্ব আছে এবং 'তাহারা মানব-মনে আপনি জন্মিয়াছে।'
তিনি ছড়ার লক্ষণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন : “ছড়ার প্রধান লক্ষণ খণ্ড খণ্ড বিক্ষিপ্ত ছবির অনায়াস সমাহরণ- যে ছবিগুলো সতর্ক সংকলন নয়, কোনো কার্যকারণ বা ঐক্য বা পরিকল্পনা সূত্রে গ্রথিত-গ্রন্থিত হয় না।”
ছড়াগুলো ছন্দের তালে তালে কতকগুলো পরস্পর সম্বন্ধহীন ভাব ও ছবিকে 'নিতান্ত প্রসঙ্গসূত্রে'- প্রায়ই একটিমাত্র শব্দানুষঙ্গের পুনরাবৃত্তির দ্বারা নিতান্ত অসংলগ্ন কিছু ছবিকে লীলাচ্ছলে জুড়ে দেয়।
এই খণ্ড, ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত, অসংলগ্ন ছবির চয়ন, এই মোজেইক বা কোলাজ বা ক্যালিডোস্কোপ জাতীয় বিচিত্রতাই রবীন্দ্রনাথের মতে- ছড়ার সংগঠনগত মূল লক্ষণ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ছড়াতে সংলগ্নতার ক্ষতিপূরণ করে দেয় ছবির বহুধা বৈচিত্র্য। তিনি স্বপ্নের অসংলগ্ন চিত্রমালার সঙ্গেও ছড়ার তুলনা করেছেন।
শিশুর সম্ভব অসম্ভবের মধ্যবর্তী সীমানা অনেক অস্পষ্ট বলে স্বপ্ন তার কাছে সত্যের মতো। তাই তাদের কাছে ছড়াগুলোর আবেদন মূলত চিত্ররসের কাছে।