পালঙ্ক সখীর পরিচয় দাও
পালঙ্ক সখীর পরিচয় দাও
পালঙ্ক সখীর পরিচয় দাও |
উত্তর : মনসুর বয়াতি রচিত, দীনেশচন্দ্র সেন সংকলিত “মৈমনসিংহ গীতিকার" অন্তর্গত 'মহুয়া' পালাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হচ্ছে পালঙ্ক সখী। পালঙ্ক সখী চরিত্রটি বন্ধুত্বের মহীমায় গৌরবদীপ্ত। পাঠক হৃদয়ে এই চরিত্রটি ভিন্ন মাত্রায় উজ্জ্বল।
বন্ধুত্বের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য যে কল্যাণ কামনা, পালঙ্ক সখী নিজের জীবন উৎসর্গ করে তার প্রমাণ দিয়েছে। মহুয়া-নদের চাঁদের প্রণয়াসিক্ত সূচনাপর্ব থেকে হুমরা বেদে যেমন তার বিনষ্টি সাধনের জন্য শত্রুতা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকেছে-
তেমনি সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে দাঁড়িয়ে পালঙ্ক সখী তাদের প্রণয় সাফল্যের জন্য সক্রিয় থেকেছে। অবশ্য বন্ধুত্বের জন্য আত্মনিবেদনেই তার চরিত্রের মাধুর্য নিঃশেষিত নয়, বুদ্ধির দীপ্তিও তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য হুমরা বেদে যখন দলবল সহ মহুয়া ও নদের চাঁদকে অনুসন্ধান করে তখন পালঙ্ক সখীই বাঁশির সুরধ্বনির সাহায্যে তাদের সতর্ক হওয়ার সংকেত দেয়। পালঙ্ক সখী সবসময় চেষ্টা করেছে মহুয়া ও নদের চাঁদের প্রেমকে সার্থক করার জন্য।
কিন্তু হুমরা বেদের জন্য তার এই চেষ্টা সফল হয়নি। অবশেষে নদ্যার চান এবং মহুয়াকে যেখানে কবর দেয়া হয়- সেখানেই পালঙ্ক সখী সারাজীবনের মতো থেকে যাই।
উদাহরণ :“রইল তথা পালং সই সুখদুখের সাথী। কান্দিয়া পোহায় কন্যা যায়রে দিনরাতিঃ অঞ্চল ভরিয়া কন্যা বনের ফুল আনে। মনের গান গায় কন্যা বইসা বনে বনে চক্ষের জলেতে ভিজায় কয়রের মাটী। শোকেতে পাগল কন্যা করে কান্দা কাটীঃ উঠ উঠ সখী তুমি কত নিদ্রা যাও ৷ আমি ডাকি পালং সই একবার কথা কত্তা”