কবিতার শ্রেণিবিভাগ লিখুন
কবিতার শ্রেণিবিভাগ দেখাও
উত্তর : কবিতা এক বিশেষ ধরনের সাহিত্য শিল্প। এ-শিল্পের উৎস ভূমি ভাবলোকের বেদনাবিদ্ধ কবি হৃদয়।
এ হৃদয় যখন বাইরের জগতের রূপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ শব্দে সুষমামণ্ডিত হয়ে এক অপরূপ মাধুর্যপূর্ণ ভাবানুভূতির ব্যঞ্জনার সে অভিষিক্ত বা রূপায়িত হয় তখনই তা হয়ে ওঠে কাব্য বা কবিতা।
অর্থাৎ সময় বিশেষে কোনো একটি সূত্রকে অবলম্বন করে কবির আনন্দ বেদনা যখন প্রকাশের পথ পায় তখনই কবিতার জন্য হয়।(Vol. 2) বর্ষ-আধুনিক কালে কবিতার ভাব ও বিষয়ে এসেছে নতুনত্ব। কবিতা এখন কেবল কবির আত্মগত অনুভবের সৌন্দর্যমূর্তি হয়।
আবেগ ছাড়াও কবির মধ্যে সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকসহ নানা বিষয়ে চিন্তার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়েছে। তাই কবিতা আজ বিচিত্র বিষয় আশ্রয়ী।
তাই এসব বিষয়ের আলোকে কবিতাকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। নিম্নে শ্রেণিবিভাগ দেখানো হলো :ভাব বিষয় বা পরিণতির দিক থেকে কবিতাকে ২টি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যথা :
১. ময় কবিতা : কবি যখন নিজের অনভূতি, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, ভাবনাচিন্তা তাঁর কাব্যে সামগ্রীরূপে গ্রহণ করে আত্মপ্রকাশ করেন-তখন আমরা তাঁর সৃষ্টিকে মন্ময় বা 'সাবজেকটিভ' কবিতা হিসেবে চিহ্নিত করি।
এ জাতীয় কবিতা এক হিসেবে কবির আত্মচরিত বা আত্মবাণী। মনুয় কবিতা আবার বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত । যথা :
ক. ভক্তিমূলক,
খ.স্বদেশ প্রীতিমূলক,
গ. প্রেমমূলক,
ঘ. চিন্তামূলক
ঙ. শোকগীতি,
চ. প্রকৃতিবিষয়ক,
ছ. সনেট,
জ. লঘু বৈঠকি কবিতা
,ঝ. স্তোত্র।
২. তন্ময় কবিতা : কবি যখন বস্তু জগৎকে যথাযথ রূপে প্রকাশ করে তখন আমরা তাকে তন্ময় বা বস্তুনিষ্ঠ কবিতা হিসেবে অভিহিত করি। এ জাতীয় কবিতায় বস্তু সত্তাই প্রধান। তন্ময় কবিতাকেও আবার কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়ক.
ক গাথা,
খ. মহাকাব্য,
গ. নীতিকাব্য,
ঘ. রূপক,
ড. ব্যঙ্গ কবিতা,
চ. লিপি কবিতা ।
কাব্য বা কবিতা মানুষের ভাবানুভূতির উজ্জ্বলতম প্রকাশ। এ প্রকাশের মধ্য দিয়ে কবি বা সাহিত্যিকগণেরা চলমান জীবনের আনন্দ বেদনা প্রভৃতিকে উপকরণ করে রূপ-রস-ছন্দ-অলংকারের সহযোগে কাব্য বা কবিতার শরীর নির্মাণ করেন এবং এভাবেই কবিতা হয়ে ওঠে হৃদয়গ্রাহী ও সুখপাঠ্য।