কাবুলের বাজার ক্রমেই গরিব হয়ে আসছে কেন?
কাবুলের বাজার ক্রমেই গরিব হয়ে আসছে কেন?
কাবুলের বাজার ক্রমেই গরিব হয়ে আসছে কেন? |
উত্তর : এক সময় কাবুলের ব্যবসিকরা দামি জিনিসপত্রের ব্যবসা করতেন। তখন তাদের হাতে টাকাপয়সার অভাব ছিল না। নানা ধরনের দামি কার্পেটে কাবুলের বাজার পরিপূর্ণ ছিল।
ঘটা করে সেই সব কার্পেটের বস্তা খোলা হতো। কত রঙ, কত চিত্রবিচিত্র নক্সা কি মোলায়েম স্পর্শসুখ। কার্পেট-শাস্ত্র অগাধ শাস্ত্র—তার কূল-কিনারাও নেই। কাবুলের বাজারে অন্তত ত্রিশ জাতের কার্পেট বিক্রি হয়, তাদের আবার নিজের জাতের ভিতরে বহু গোত্র, বহু বর্ণ।
জন্মভূমি, রঙ, নক্সা, মিলিয়ে সরেস মালের বাছ-বিচার হয়। বিশেষ রঙের নক্সা বিশেষ উৎকৃষ্ট পশম দিয়ে তৈরি হয়-সে মালের সস্তা জিনিস হয় না। এককালে বেনারসী শাড়িতে এ ঐতিহ্য ছিল-আড়িবেল শাড়ির বিশেষ নক্সা উৎকৃষ্ট রেশমেই হতো—সে নক্সায় নিরেস মাল দিয়ে ঠকাবার চেষ্টা ছিল না।
আজকের দিনে কাবুলের বাজারে কেনবার মতো তিনটে ভালো জিনিস আছে কার্পেট, পুস্তিন আর সিদ্ধ। ছোটখাটো জিনিসের ভিতর ধাতুর সামভার আর জড়োয়া পয়জার। বাদবাকি বিলাতি আর জাপানি কালের তৈরি সস্তা মাল, ভারতবর্ষ হয়ে আফগানিস্তানে ঢুকছে।
কাবুলের বাজার ক্রমেই গরিব হয়ে আসছে। তার প্রধান কারণ ইরান ও রুশের নবজাগরণ। আমুদরিয়ার ওপারের মাঝে বাঁধ দিয়ে রাশিয়ানরা তার স্রোত মস্কোর দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে, ইরানিরা তাদের মাল সোজাসুজি ইংরেজ অথবা রাশিয়ানার বিক্রি করে।
কাবুলের পয়সা কমে গিয়েছে বলে সে ভারতের মাল আর সে পরিমাণে কিনতে পারে না। আমাদের রেশম মসলিন শিল্পেরও কিছু মরমর, বেশিরভাগ ইংরেজ সাত হাত মাটির নিচে কবর দিয়ে শ্রাদ্ধশান্তি করে চুকিয়ে দিয়েছে ।