আফগান সরাই এর চিত্র তুলে
আফগান সরাই এর চিত্র তুলে
আফগান সরাই এর চিত্র তুলে |
উত্তর : আধ মাইলটাক দূরে আফগান সরাই। বেতারের সায়েব ও লেখক আস্তে আস্তে সেদিকে এগিয়ে চললেন। বাদবাকি আর সকলে হৈহল্লা করে গাড়ি ঠেলে নিয়ে চলল। এদেশেও বাস ছাড়ার পূর্বে সাদা কালিতে কাবিন নামায় লিখে দিতে হয়, “বিবিজানের খুশীগমীতে তাঁহাকে স্বহস্তে স্বস্কন্ধে ঠেলিয়া লইয়া যাইতে গররাজী হইব না।”
সর্দারজী তম্বী করে বললেন, “একটু পা চালিয়ে। সন্ধ্যা হয়ে গেলে সরাইয়ের দরজা বন্ধ করে দেবে।” সরাই এর বেহাল অবস্থা দেখে লেখক চমকে উঠেছিলেন। সরাই তো নয়, ভীষণ দুশমনের মতো দাঁড়িয়ে এক চৌকা দুর্গ। ‘কর্ম শেষে নিভৃত পান্থশালা' বলতে চোখে যে স্নিগ্ধতার ছবি ফুটে উঠে এর সঙ্গে তার কোনো সংস্রব নেই।
ত্রিশ ফুট উঁচু হলদে মাটির নিরেট চারখানা দেওয়াল, সামনের খানাতে এক বিরাট দরজা তার ভিতর দিয়ে উট, বাস, ডবল-ডেকার পর্যন্ত অনায়াসে ঢুকতে পারে, কিন্তু ভিতরে যাবার সময় মনে হয়, এ শেষ ঢোকা, এ দানবের পেট থেকে আর বের হতে হবে না। আফগান সরাইয়ের সাথে লেখক বেথেলহেম সরাইয়ের রসাত্মক তুলনা করেছেন :
‘বেথেলহেমের সরাইয়ে আর আফগানিস্তানের সরাইয়ে কি তফাত? বেথেলহেমেও বৃষ্টি হয় তিন ফোঁটা আর বরফ পড়ে আড়াই তোলা। কে বললে তোমায় ইহুদি আফগানের চেয়ে পরিষ্কার? আফগানিস্তানের গন্ধে তোমার গা বিড়োচ্ছে, কিন্তু ইহুদির গায়ের গন্ধে বোকা পাঁঠা পর্যন্ত লাফ দিয়ে দরমা ফুটো করে প্রাণ বাঁচায়।'