পেশাদার সমাজকর্মীর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা লেখ
পেশাদার সমাজকর্মীর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা লেখ
উত্তর ভূমিকা : সমাজকর্ম জ্ঞানের অন্যতম উৎস হলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান । আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান হলো এমন একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা সমাজে মানুষের ভূমিকা, কার্যাবলি, দায়িত্ব, কর্তব্য প্রভৃতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। সমাজকর্ম জ্ঞানের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে গৃহীত হয়েছে। তাই একজন সমাজকর্মীর পেশাগত জ্ঞান অনুশীলনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক ।
পেশাদার সমাজকর্মীর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা লেখ |
● সমাজকর্মীর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব/প্রয়োজনীয়তা : নিম্নে সমাজকর্মীর জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব/প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলো-
১. অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানা : সমাজকর্ম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান উভয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নাগরিকদের দায়িত্ব, কর্তব্য এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে আদর্শ জীবনের ইঙ্গিত প্রদান করে । অপরদিকে, সমাজকর্মও মানুষের সুপ্ত প্রতিভা ও শক্তির বিকাশ সাধন করে তাদেরকে যথাযথ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তোলে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সমাজকর্মের এ অভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে একজন পেশাদার সমাজকর্মীকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ করা জরুরি।
২. বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ : সমাজকর্ম রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বৃহত্তর পরিধির একটি অংশ নিয়ে আলোচনা করে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্রীয় সংগঠনের সদস্য হিসেবে মানুষের আচারআচরণ, অধিকার ও কর্তব্য এবং সরকার ও রাষ্ট্রের সাথে নাগরিকদের সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। অন্যদিকে সমাজকর্ম রাষ্ট্রীয় আওতায় বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাদস্য হিসেবে মানুষের আচারআচরণ ও সম্পর্ককে বিশ্লেষণ করে। সুতরাং সমাজকর্মের নিগূঢ় বিষয়বস্তু জানতে হলে একজন সমাজকর্মীকে অবশ্যই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞানারহণ করতে হবে।
৩. সামাজিক সংস্কার : সমাজে প্রচলিত নানান কুসংস্কার এবং কুপ্রথা সামাজিক উন্ন২। সমাজকর্ম পরিচিতি (নন-মেজর
রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজকর্মকে সহায়তা করে থাকে। এক্ষেত্রে নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য, সামাজিক নিরাপত্তা এবং আইন সম্পর্কিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞান সমাজকর্মীদের সহায়ক হিসেবে কাজ করে ।
৪. মানব সম্পদ উন্নয়ন : সমাজকর্মের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো সামাজিক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে মানব সম্পদের উন্নয়ন সাধন করা। সমাজকর্মীরা মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করে থাকেন। আর মানব সম্পদ উন্নয়ন করতে নাগরিক দায়িত্ব, কর্তব্য এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানই একজন সমাজকর্মীকে এ বিষয়ে যথার্থ জ্ঞানদান করে থাকে ।
৫. জনমত সম্বন্ধে ধারণা লাভ : সমাজকর্মীকে জনমতের দিকে লক্ষ রেখেই কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। কেননা জনমত বিরোধী কর্মসূচি কখনও সমাজের জন্য সামগ্রিক কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। তাই জনমত সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা সমাজকর্মীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের মাধ্যমেই পেয়ে থাকে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আওতা বা পরিধি সমাজকর্মের পরিধির চেয়ে অনেক ছোট। কারণ সমাজের বৃহত্তর পরিধি একটা অংশ হলো রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের কল্যাণের কথা চিন্তা করা যায় না। তবে রাষ্ট্রের কল্যাণের সার্বিক এবং যথাযথ দিকনির্দেশনা দান করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান। তই ব্যবহারিক ক্ষেত্রে পেশাগত জ্ঞান প্রয়োগে সমাজকর্মীকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জ্ঞানের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়।য়নে বাধা সৃষ্টি করে। এগুলোর সংস্কার সাধনে