ইয়েটস রিপোর্ট কি | ইয়েটস রিপোর্ট বলতে কি বুঝ
ইয়েটস রিপোর্ট কী | ইয়েটস রিপোর্ট বালতে বুঝ কী
অথবা, ইয়েটস রিপোর্ট কী?
উত্তর ভূমিকা : আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত দরিদ্রাগার ও ত্রাণ সাহায্য কার্যক্রমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের জন্য ম্যাসাচুস্টেসের সাধারণ আদালত ১৮২১ সালে দরিদ্র সাহায্য কার্যক্রমে দ্রুত সমস্যা মোকাবিলা করে, সাহায্য ব্যবস্থার কার্যকারিতা কৃষ্ণর জন্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করার জন্য একটি কাটি গঠন করেন। উক্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৮২৪ সল জে. ভি. এ ইয়েটস যে রিপোর্ট প্রকাশ করেন তাই ইয়েটস রিপোর্ট
ইয়েটস রিপোর্ট কী ইয়েটস রিপোর্ট বালতে বুঝ কী |
ইয়েটস রিপোর্ট : আমেরিকা ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুলাই ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। নব্য স্বাধীন আমেরিকার ! জন্মলগ্নে ব্যাপক দারিদ্র্য সমস্যা একটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, ব্যাপক বেকারত্ব, গণদারিদ্র্য, কর্মসংস্থানের অভাব, ফসলহানি ও কম ফসল উৎপাদন এবং সর্বোপরি অধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি দারিদ্র্য সমস্যার ভয়াবহতার মাত্রাকে বাড়িয়েছে বহুগুণে। এ অবস্থায় প্রতিদিন নতুন নতুন সাহায্যগ্রহীতার সংখ্যা বাড়তে থাকে। এত ব্যাপকসংখ্যক লোকের ভরণপোষণে স্থানীয় প্যারিশ (Parish) প্রশাসন ও কাউন্টি (County) প্রশাসন অক্ষমতা প্রকাশ করতে থাকে ।
ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আমেরিকায় নতুন নতুন সেবাকেন্দ্র গড়ে ওঠে এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ ও সাহায্য কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। দরিদ্র জনগণের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকায় প্যারিশভিত্তিক দরিদ্রাগার ও সেবাকেন্দ্রগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং ব্যয় বৃদ্ধির অভিযোগ ওঠে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় প্যারিশের ওভারসিয়ার ও প্রশাসকগণ স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে সাহায্য অনুমোদন করায়। এমতাবস্থায় দরিদ্র সাহায্য ও ত্রাণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা লক্ষ করা যায়। ঠিক এসময়ে ত্রাণ ও সাহায্য কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ম্যাসাচুসেটসের সাধারণ আদালত ১৮২১ সালে দরিদ্র সাহায্য কার্যক্রমের তদন্তের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করেন।
ব্যাপক তদন্ত ও অনুসন্ধানের পর এ কমিটি দরিদ্র সাহায্য ও ত্রাণ কার্যক্রমের পাঁচটি নীতি গ্রহণের সুপারিশ করে। এ পাঁচটি নীতির হচ্ছে— বাহ্যিক ত্রাণ সাহায্যের ব্যবস্থা করা, কম ব্যয়সাপেক্ষে দরিদ্রাগারগুলো পরিচালিত করা, দরিদ্রদের কৃষিকাজে নিয়োজিত করা, দরিদ্রাগার তত্ত্বাবধানের জন্য একটি নাগরিক বোর্ড গঠন, দারিদ্র্যের মূল কারণ হচ্ছে অপব্যয় ।
উক্ত সুপারিশ পেশের দুই বছর পর নিউইয়র্কের আইনসভা ১৮২৩ সালে স্টেট সেক্রেটারি জে. ভি. এন. ইয়েটসকে দরিদ্র আইন ও সাহায্য কার্যক্রমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে ব্যয় হ্রাস করে এসবের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহের নির্দেশ দেয়।
যার প্রেক্ষিতে ১৮২৪ সালে জে. ভি. এন. ইয়েটস তার অনুসন্ধানভিত্তিক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন, যা ইয়েটস রিপোর্ট নমে পরিচিত। ইয়েটস তার রিপোর্টে দরিদ্রদের দুটি শ্রেণিতে করেন। যেমন— স্থায়ী দরিদ্র ও অস্থায়ী দরিদ্র ইয়েটস রিপোর্টের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ছিল যথাযথ অনুসন্ধন ছাড়া ভিক্ষুক ও ভবঘুরেদের জন্য ত্রাণ সাহায্য অনুমোন না করা।
উপসংার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইয়েটস রিপোর্টের পরিকল্পিত ও সুচিন্তি সুপারিশসমূহ আমেরিকার দরিদ্র সাহায্য ও ত্রাণ কার্যমে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। ইয়েটস রিপোর্টে বিত্তি ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা, আইনি বাধা, কারাগারের অস্বস্থ্যকর পরিবেশ, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশের অভাব, দরিদ্রদের প্রতি নির্মম আচরণ ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয় ।