বর্তমানে ইংল্যান্ডে কোন কোন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে

বর্তমানে ইংল্যান্ডে কোন কোন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে

প্রশ্ন ২.১৬ | বর্তমানে ইংল্যান্ডে কোন কোন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে?

অথবা, ইংল্যান্ডে বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিগুলো উল্লেখ কর ।

উত্তর ভূমিকা : ইংল্যান্ডের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিগুলো তাকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত পাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এজন্য ইংল্যান্ডের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিকে সারা বিশ্বের জন্য মডেল হিসেবে মনে করা হয়। ইংল্যান্ডে প্রচলিত সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রমগুলো যথেষ্ট আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত।

বর্তমানে ইংল্যান্ডে কোন কোন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে
বর্তমানে ইংল্যান্ডে কোন কোন সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে

বর্তমানে ইংল্যান্ডে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি : নিম্নে ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি উল্লেখ করা হলো— 

১. সরকারি সাহায্য কার্যক্রম : ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হচ্ছে সরকারি সাহায্য কার্যক্রম। ১৯৪৮ সালের জাতীয় সাহায্য আইনের মাধ্যমে বিমা সুবিধার বহির্ভূত জনগণের জন্য বিভিন্ন ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সরকারি সাহায্য কর্মসূচির মাধ্যমে অক্ষম, নির্ভরশীল ব্যক্তিরা তাদের জীবনযাপনের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সাহায্য পেত। কিন্তু পরবর্তীতে সময়ের চাহিদা পূরণে .বিদ্যমান কর্মসূচি অপর্যাপ্ত হওয়ায় ১৯৬৫ সালের সম্পূরক সুবিধা চালু করা হয়। সম্পূরক সুবিধার আওতায় দুর্বল ও অসচ্ছল পরিবারকে আয় সম্পূরক ভাতা প্রদান করা হতো। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে সরকারি সাহায্যের পরিমাণ ও পরিধি বাড়ানো হয় ।

২. পারিবারিক ভাতা ও শিশু ভাতা : ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হচ্ছে পারিবারিক ভাতা ও শিশু ভাতা। ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তামূলক এ কর্মসূচিটি বিভারিজ রিপোর্টের সুপারিশের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়। শুরুর দিকে পারিবারিক ভাতার আওতায় প্রথম সন্তানের পরবর্তী সব সন্তান ১৬ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ৯০ পেন্স করে ভাতা দেওয়া হতো। পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে পারিবারিক ভাতার নাম পরিবর্তন করে শিশু ভাতা করা হয় এবং নতুন নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের সব সন্তানের জন্য এ ভাতা উন্মুক্ত করা হয়। 

৩. অক্ষমতাজনিত জীবনভাতা : ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অক্ষম ও নির্ভরশীলদের ভরণপোষণের জন্য অক্ষমতাজনিত জীবনভাতা প্রচলিত আছে । অক্ষমদের কল্যাণের জন্য ১৯৮৬ সালে প্রণয়ন করা হয় 'Disabled Person Act' বা অক্ষম ব্যক্তি আইন। পরবর্তীতে অক্ষম ব্যক্তিদের আরও অধিক সুবিধা প্রদানের জন্য প্রণয়ন করা হয় ১৯৯৫ সালের অক্ষমতা বৈষম্য আইন। এ আইনের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের অক্ষম জনগণের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনমূলক সেবা প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে এর 

৪. চাকরি সন্ধান ভাতা : ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হচ্ছে চাকরি ভাতা। এ ভাতার আওতায় যারা সাপ্তাহিক ১৬ ঘণ্টার কম কাজ করে বা কাজ খুঁজে পাচ্ছে না তাদের এ সাহায্য বা ভাতা প্রদান করা হয় ।

৫. মাতৃত্ব সুবিধা : ইংল্যান্ডের মাতৃত্ব সুবিধার আওতায় ৪ সপ্তাহের জন্য সাপ্তাহিক ভাতা বা ১৮ সপ্তাহের মাতৃত্ব ভাতা দেওয়া হয়। এ কর্মসূচির আওতায় স্বামীর মৃত্যু হলে বিধবা স্ত্রীকে ৩০ সপ্তাহের সামজস্য ভাতা দেওয় হয়। নির্ভরশীল শিশুরা এ ব্যবস্থার আওতায় অভিভাবক ভাতা পেয়ে থাকেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত। বিভারিজ রিপোর্টের সুপারিশের আদলে মূলত ইংল্যান্ডের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গৃহীত হয়। তবে একথা সত্য যে বর্তমান ইংল্যান্ডে বিভারিজ রিপোর্টের সুপারিশের বাইরেও অনেক সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।সাথে যোগ করা হয় হাজিরা ভাতা ও মোবিলিটি ভাতা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ