বিভারিজ রিপোর্ট এর পঞ্চদৈত্য কি | বিভারিজ রিপোর্টের আলোকে পঞ্চদৈত্য ব্যাখ্যা কর
বিভারিজ রিপোর্ট এর পঞ্চদৈত্য কি | বিভারিজ রিপোর্টের আলোকে পঞ্চদৈত্য ব্যাখ্যা কর
প্রশ্ন ২.১৪ | বিভারিজ রিপোর্টের পঙ্গুদৈত্য কী?
অথবা, বিভারিজ রিপোর্টের আলোকে পঙ্গুদৈত্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ভূমিকা : ইংল্যান্ডসহ সারাবিশ্বের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মূল ধারণা গ্রহণ করা হয় বিভারিজ রিপোর্ট থেকে। বিভারিজ রিপোর্টের সুপারিশের ভিত্তিতেই মূলত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করা। বিভারিজ রিপোর্টের প্রবক্তা উইলিয়াম বিভারিজ তার রিপোর্টে মানুষের সার্বিক অগ্রযাত্রাকে বাধা দেয় এমন পাঁচটি প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ করেন।
![]() |
বিভারিজ রিপোর্টের পঙ্গুদৈত্য কী বিভারিজ রিপোর্টের আলোকে পঙ্গুদৈত্য ব্যাখ্যা কর |
বিভারিজ রিপোর্টের পঙ্গুদৈত্য : বিভারিজ রিপোর্টের সুপারিশমালা একগুচ্ছ কল্যাণমূলক ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। বিভারিজ রিপোর্টে মানুষের সামগ্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধা দেয় এমন পাঁচটি প্রতিবন্ধকতার কথা উল্লেখ আছে। এ পাঁচটি প্রতিবন্ধকতাকে 'Five giants' বা পঞ্চদৈত্য বলা হয়। এ পাঁচটি প্রতিবন্ধকতা হলো— ক. অভাব (Want), খ. অসুস্থতা (Disease), গ. অজ্ঞতা (Ignorance), ঘ. অলসতা (Idleness) ও ঙ. মলিনতা (Squalor)।
নিম্নে পঞ্চদৈত্যসমূহ উল্লেখ করা হলো—
১. অভাব : অভাব বলতে নিজস্ব আর্থিক ক্ষমতার মাধ্যমে মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ করার অক্ষমতা। মোটকথা নিজের প্রয়োজন পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত টাকা পয়সা না থাকা ।
২. অসুস্থতা : অসুস্থতা বলতে শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতাকে বুঝায়, যা তার সামাজিক ভূমিকা পালনকে বাধাগ্রস্ত করে ।
৩. অজ্ঞতা : অজ্ঞতা বলতে জ্ঞানের স্বল্পতা বা না থাকাকে বুঝায় । এ অজ্ঞতার কারণে ব্যক্তি তার নিজের ভূমিকা ও দায়িত্বকে চিহ্নিত করতে পারে না। এ অজ্ঞতার কারণে অসচেতনতা, নেশাগ্রস্ততা, অপরাধপ্রবণতা, বেকারত্ব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় ।
৪. অলসতা : শারীরিকভাবে সক্ষম ও যোগ্য থাকা সত্ত্বেও কাজঞদৈত্য নামে পরিচিত।
৫. মলিনতা : মলিনতা বলতে ব্যক্তির চিন্তা, রুচির পশ্চাৎপদতাকে বুঝায়। অনুন্নত বাসস্থান, কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানসিকতা, গোঁড়ামি, অশ্লীলতা, ময়লা আবর্জনা ইত্যাদি মলিনতার অন্তর্ভুক্ত, যা ব্যক্তির সার্বিক কার্যকলাপের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। বিভারিজ রিপোর্টে বর্ণিত এ পঞ্চদৈত্যকে একটি দুষ্টচক্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় । দুষ্টচক্রের এ উপাদানগুলো পরস্পর আন্তঃসম্পর্কিত, যার একটা আরেকটাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তাণ্ডবলীলায় ইংল্যান্ডের জনজীবন যখন ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত ঠিক সে সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী এ রিপোর্ট পেশ করেন স্যার উইলিয়াম বিভারিজ। বিভারিজ তার রিপোর্টে অভাব, অজ্ঞতা, মলিনতা, অলসতা, অসুস্থতা এ পাঁচটি বিষয়কে সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মূল প্রতিবন্ধক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। যাদের একত্রে বলা হয় 'Five gaints' বা পঙ্গুদৈত্য।