১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর
১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর
প্রশ্ন ২.০৪ ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ কী?
উত্তর ভূমিকা : দরিদ্রদের কল্যাণের জন্য প্রণীত ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এক মাইলফলক। এটি ছিল ইংল্যান্ডের দরিদ্র আইনের ইতিহাসে ৪৩ তম প্রয়াস। ৪৩ তম প্রয়াস হলেও এর স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কারণে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী দরিদ্র আইনগুলো থেকে একে সহজেই আলাদা করা যায়। কেননা ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনের কতকগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। • ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্য : নিম্নে ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ করা হলো—
১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর |
১. পূর্ববর্তী আইনসমূহের সমন্বিতরূপ : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন ১৩৪৯-১৫৯৭ সাল পর্যন্ত প্রণীত ৪২টি আইনের নেতিবাচক দিকগুলো বাদ দিয়ে কল্যাণমূলক বিষয়গুলো গ্রহণ করে একটি সমন্বিত আইন হিসেবে আবির্ভূত হয়
২. সরকারি দায়িত্বশীলতা : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে দরিদ্রদের কল্যাণের জন্য সরকারি দায়িত্বশীলতাকে স্বীকার করে নেওয়া হয়।
৩. দরিদ্রদের শ্রেণিবিভাগ : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে দরিদ্রদের সক্ষম দরিদ্র, অক্ষম দরিদ্র, নির্ভরশীল বালক বালিকা এই তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়।
৪. সচ্ছল আত্মীয়স্বজনের দায়িত্ব স্বীকৃতি : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে বিধান করা হয় যে, যেসব দরিদ্রের সচ্ছল অভিভাবক বা আত্মীয়স্বজন আছে তাদের ভরণপোষণের জন্য প্যারিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। এমনকি এরূপ দরিদ্রদের ভিক্ষা দেওয়াও নিষিদ্ধ করা হয় । সচ্ছল অভিভাবক বা আত্মীয়স্বজনদেরকে দরিদ্রদের সাহায্যদানে বাধ্য করা হয়।
৫. দরিদ্র স্থানান্তরে নিরুৎসাহিত করা : ভিক্ষুক ও ভবঘুরেদের অবাধ স্থানান্তর রোধ করতে সাহায্য লাভের জন্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কমপক্ষে তিন বছর সংশ্লিষ্ট প্যারিশে বসবাস করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।
৬. পারিবারিক দায়িত্বের স্বীকৃতি : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইনে বিধান করা হয় নির্ভরশীল ও অক্ষম পিতামাতার ভরণপোষণের দায়িত্ব সচ্ছল সন্তানদের। আবার নির্ভরশীল সন্তানদের ভরণপোষণের দায়িত্ব সচ্ছল পিতামাতার ।
৭. Overseer নিয়োগ : ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন বাস্তবায়ন করা হয় প্যারিশভিত্তিক ওভারসিয়ারের মাধ্যমে। তিনি এ আইনে বিধান প্রতিষ্ঠা করণের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা করে থাকেন। ওভারসিয়ার সাহায্যের জন্য দরখাস্ত গ্রহণ করার পর তদন্ত করে সাহায্যের প্রকৃতি নির্ধারণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৬০১ সালের দরিদ্র আইন হলো ইংল্যান্ডের রানি প্রথম এলিজাবেথের শাসনামলে প্রণীত দরিদ্রদের কল্যাণে একটি যুগান্তকারী বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। এ দরিদ আইন ইংল্যান্ডের দরিদ্রদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পূর্ববর্তী আইনসমূহের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রণীত হওয়ায় এ আইন কতকগুলো স্বকীয় ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।