টেকসই উন্নয়নে সামাজিক বিষয়সমূহ আলোচনা কর

টেকসই উন্নয়নে সামাজিক বিষয়সমূহ আলোচনা কর
টেকসই উন্নয়নে সামাজিক বিষয়সমূহ আলোচনা কর

টেকসই উন্নয়নে সামাজিক বিষয়সমূহ আলোচনা কর

উত্তর : টেকসই উন্নয়ন হচ্ছে বহুমুখী উন্নয়নের একটি সমন্বিত রূপ। এর প্রেক্ষিতে পরিবেশগত দিকের সাথে সাথে সামাজিক দিকগুলোকেও বিবেচনায় আনতে হবে। 

বাংলাদেশের সামাজিক সম্প্রীতি ও সামাজিক মূল্যবোধ অনেক বেশি ইতিবাচক তবে কিছু বিষয়ের উপর গুরুত্ব প্রদান করা হলে তা টেকসই উন্নয়নের অনুগামী হবে ।

১. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাসকরণ : বাংলাদেশের জনসংখ্যা অধিক মাত্রায় বেড়ে চলছে তবে UNDP-এর মতে বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি ৪২ লক্ষ। 

এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩২। এ বিশাল জনগোষ্ঠী এ ছোট ভূ-খণ্ডে বসবাস করে যার ঘনত্ব ৯৮৭ জনের মতো প্রতি কি.মি.-তে । 

আর এই বৃদ্ধির হার অতিদ্রুত হ্রাস করতে হবে টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে ।

২. সন্ত্রাস ও দুর্নীতি প্রতিরোধ : বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি স্পষ্ট করার মূল শক্তি হলো সন্ত্রাস ও দুর্নীতি। এটি এদেশের সমাজ ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। 

আর এর থেকে বের না হতে পারলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। কেননা এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা ও মানুষের জীবনের মূল্য সমাজে একটি উচ্ছৃঙ্খল ও বিশ্বাস সৃষ্টি করে সমাজকে ক্ষতি করে। আর এর প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে ।

৩. বেকারত্ব দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি : বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী SSC ও HSC বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। আর এদের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা জীবন। শেষ করে বেকার হয়ে পড়ে। 

মূলত আমাদের দেশে প্রথাগত। শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষিত করছে বটে কিন্তু দক্ষ তথা কর্মদক্ষতা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষিত করতে বটে কিন্তু দক্ষ তথা কর্মদক্ষতা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। 

পাশাপাশি এ জনগোষ্ঠীর চাহিদা যুক্তরাষ্ট্র কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারছে না। এগুলো টেকসই উন্নয়নের বিপরীত। আর এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

৪. দারিদ্র্য দূরীকরণ : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১১ অনুযায়ী দেশে মোট দরিদ্র জনগোষ্ঠী ৩২%। আর এটি এমন একটি সমস্যা যা রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ ও প্রোগ্রাম।

৫. রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা রোধ : রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের একটি অন্যতম বাধা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর গঠন পদ্ধতি ও দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস এই অস্থিতিশীলতার মূল কারণ। এ বিষয়গুলো অধিক গণতান্ত্রিক হলে তা রোধ করা সম্ভব হবে।

৬. নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও শিশুশ্রম রোধ : বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে নিরক্ষরতা। এর নিরসনে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। 

অপরদিকে শিক্ষার অধিকার বঞ্চিত শিশু শ্রমকে নিষিদ্ধ করে বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। আর এর জন্য যে পদক্ষেপগুলো আবশ্যক, সেগুলো হলো :

৭. HIV/AIDS ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ : টেকসই উন্নয়নের জন্য HIV/AIDS ও অন্যান্য মরণব্যাধী যেমন-ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, সিফিলিস, যক্ষা ইত্যাদি রোগসহ অন্যান্য সাধারণ রোগ প্রতিরোধ আবশ্যক আর এর জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ দরকার ।

৮. নারীর ক্ষমতা ও নির্যাতন রোধ : নারী নির্যাতন সমাজকে ধীরে ধীরে পিছিয়ে দেয়। তাছাড়া নারীর ক্ষমতায়নের মূলকথা হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর সমান অংশগ্রহণ। 

আর ক্ষমতায়ন অনেক ক্ষেত্রে এই নির্যাতন রোধে খুবই কার্যকরী তবে উল্লেখ্য নারীর ক্ষমতায়ন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কর্মে নারীর অংশগ্রহণকে নির্দেশ করে না। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ