পরিবেশ নীতি কি । পরিবেশ নীতি কাকে বলে । পরিবেশ নীতি বলতে কী বোঝো
পরিবেশ নীতি কি । পরিবেশ নীতি কাকে বলে । পরিবেশ নীতি বলতে কী বোঝো |
পরিবেশ নীতি কি । পরিবেশ নীতি কাকে বলে । পরিবেশ নীতি বলতে কী বোঝো
- অথবা, পরিবেশ নীতির সংজ্ঞা দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : মানুষ সৃষ্টির আদিকাল থেকেই সমাজ গঠন করেনি। সে প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে চলতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতো।
তখন আদিম মানুষ নিজেদের বাঁচাতে গিয়ে সমাজ নামে একটি সংগঠনের জন্ম দিয়েছিল যা এখন আধুনিক সমাজে রূপ নিয়েছে।
মানুষ এ সমাজ যেমন ওতপ্রোতভাবে জড়িত তেমনি মানুষ ও পরিবেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সমাজের এই বসবাস করার তাগিদে মানুষ প্রাকৃতিক পরিবেশকে শোষণ করছে।
কারণ মানুষ যদি প্রাকৃতিক পরিবেশকে শোষণ না করে সমাজ গঠন করত তবে মানুষ নামে প্রাণীর অস্তিত্ব আজ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হতো।
কিন্তু মানুষ এত বুদ্ধিমান প্রাণী হওয়া সত্ত্বেও দুঃখের বিষয় এই যে মানুষ আজ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
তাই মানুষের পরিবেশের উপর এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্য মানুষ গঠন করেছেন বিভিন্ন পরিবেশ নীতি। যা প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে।
→ পরিবেশ নীতি : পরিবেশ নীতি সম্পর্কে বলতে গেলে সর্বপ্রথম পরিবেশের উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হবে। মানুষ, গাছপালা, মাটি, পানি, বায়ু, আগুন ও অন্যান্য জৈব এবং অজৈব পদার্থ নিয়ে পরিবেশ পঠিত।
এগুলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে পরিবেশে থাকলে পরিবেশে কোনো ক্ষতি হয় না। কিন্তু আজ পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে, পরিবেশ আজ হুমকির মুখে।
তাই পরিবেশ নীতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সর্বপ্রথম পরিবেশ নীতি নিয়ে ব্রাজিলের রিওড়ি জেনিরোতে সর্বপ্রথম ১৯৯২ সালে একটি Conference করা হয় যে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে তা না হলে পৃথিবীর ভারসাম্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।
পরিবেশ নীতি বলতে সাধারণত এমন এক ধরনের নীতি গ্রহণকে বোঝায় যেখানে পরিবেশ ও সমাজের মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের একটি কার্যকর ভারসাম্য বজায় রাখা।
এই পরিবেশ নীতির মাধ্যমে উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের জন্য পরিবেশের সর্বাধিক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। যাতে করে সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরিবেশে ভারসাম্য বজায় রাখে।
মানুষ হলো পরিবেশের প্রধান নিয়ামক বলতে গেলে পরিবেশের প্রধান ধারক ও বাহক। তাই মানুষ পরিবেশ রক্ষার্থে বিভিন্ন ধরনের Policy গ্রহণ করেছে যা পরিবেশ নীতি নামে পরিচিত।
আমাদের দেশে পরিবেশ নীতি ঘোষণা করা হয় ১৯৭৩ সালে। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কৃষির উপর ব্যাপক জোর দেওয়া হয়।
কারণ কৃষি একটি দেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে কৃষি পুরস্কারের নামে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার করা হয়।
আর এতে করে পরিবেশের জন্য ব্যাপকভাবে কৃষি কাজ করতে মানুষ উৎসাহিত | হয় এবং ব্যাপকভাবে কৃষি কাজ করতে শুরু করে মানুষ।
অভি দ্রুত বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ভাই বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম কৃষিপ্রধান দেশ।
কৃষির মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হয়। আমাদের দেশে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় যেসব Policy গ্রহণ করা হয়েছে তা মূলত টেকসই উন্নয়নের জন্য।
কারণ হিসাবে আমরা বলতে পারি একটি দেশের উন্নয়নে মূল চাবিকাঠি হলো টেকসই উন্নয়ন। কারণ পরিবেশ নীতি ঘোষণার মাধ্যমে পরিবেশ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বেশ সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়।
পরিবেশ নীতির একটি সাফল্য স্বরূপ আমরা দেখতে পারি ২০০০ সালে আমরা খাদ্যেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভ করি।
আমাদের সকলেই জানা আছে যে, একটি দেশের পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে সে দেশের কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার।
তা না হলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও একটি দেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য যে দেশের সামগ্রিক আবহাওয়া নির্ভর করে যে দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর।
পৃথিবীতে যত সভ্যতা গড়ে ওঠেছে আর বর্তমানে যেসব দেশ উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে তাদের মূলে রয়েছে জ্ঞান ও শিক্ষা। একটি কথা আছে শিক্ষায় জ্ঞান।
তাই একটি দেশ পরিবেশ নীতির কৌশল হিসাবে শিক্ষাকে অবৈতনিক ঘোষণা করেছেন । এর কারণ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী পারে যে দেশের পরিবেশ এর যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে।
পরিবেশ নীতির বাস্তবায়নের শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। পরিবেশ নীতির কারণে সারা বিশ্বে আজ কৃষিতে লেগেছে উন্নত প্রযুক্তির ছোয়া।
যে কারণে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপক হারে। আর এতে করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়।
উপসংহার : উপরের আলোচনা থেকে বলা যায় যে, বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। তাই এই দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি কৃষির সাথে জড়িত।
তাই পরিবেশ নীতি কৃষির জন্য এক বিরাট পরিবর্তন শুধু বাংলাদেশই নয় সমগ্র দেশের পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম আর এই ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে পরিবেশ নীতি আবশ্যক সে দেশের জন্য।
পরিবেশ নীতির সাথে একটি দেশের উন্নয়ন, অনুন্নয়ন অধিকাংশে দায়ী। তাই দেশের একজন সুনাগরিক হিসাবে পরিবেশ নীতির সাথে একমত পোষণ করে পরিবেশ নীতিকে আরো বেশি ত্বরান্বিত করা আমাদের সকলের কর্তব্য।