কৃষি বনায়ন কি । কৃষি বনায়ন কাকে বলে । কৃষি বনায়ন বলতে কি বুঝায়
কৃষি বনায়ন কি । কৃষি বনায়ন কাকে বলে । কৃষি বনায়ন বলতে কি বুঝায় |
কৃষি বনায়ন কি । কৃষি বনায়ন কাকে বলে । কৃষি বনায়ন বলতে কি বুঝায়
- অথবা, কৃষি বনায়নের সংজ্ঞা দাও ।
- অথবা, কৃষি বনায়ন কী?
উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। সবুজ শ্যামলে ভরা আমাদের এই দেশে কৃষি হলো আয়ের প্রধান মাধ্যম। কৃষির সাথে বনায়নের একটা সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে।
কারণ বন ও কৃষি সেই আদিকাল থেকে একসাথে চলে আসছে। আদিমকালেমানুষের অর্থনীতির ভিত্তি ছিল বননির্ভর অর্থনীতি।
বর্তমানে বনায়ন একটু ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছে আমাদের অর্থনীতিতে। কারণ বন, পরিবেশ ও কৃষির মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।
কৃষি ও বনায়ন হলো একটি সমন্বিত চাষাবাদ পদ্ধতি যেখানে একই সাথে বন ও ফসল চাষাবাদ করা যায়। সাধারণত একটু নির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনা বজায় রেখে এ ধরনের চাষাবাদ করা হয়।
কৃষি বনায়ন : কৃষি বনায়নের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Agro Forestry. কৃষি বনায়ন হলো এমন এক ধরনের বনায়ন কর্মসূচি যার সাথে সমন্বয় রেখে কৃষিজ ফসল উৎপাদন করা হয়।
অর্থাৎ গাছ ও ফসল একসাথে চাষ করা হয়। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে সাধারণত এ ধরনের বন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি সমন্বিত চাষাবাদ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
যেমন যেকোনো ফলের গাছের সাথে চাষাবাদ করা হয়। আম বাগানের সাথে সরিষা, হলুদ, আদা, গম ইত্যাদি চাষ করা যায়। সুতরাং এটি একটি যৌথ চাষাবাদ পদ্ধতি।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন কৃষি বিজ্ঞানী ও বন গবেষক প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে কৃষি বনায়নের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
নিম্নে কয়েকটি সংজ্ঞা প্রদান করা হলো :
বেন কমিশন এর মতে, “কৃষি বনায়ন হলো ভূমির এক টেকসই ব্যবস্থাপনা, যেখানে যৌথ বা পর্যায়ক্রমে কৃষিজ ফসল উদ্ভিদ ফসল এবং বনজ উদ্ভিদ ও পশুপালনকে একসাথে উৎপাদন করা হয়। এটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। "
RI Coher-এর মতে, “কৃষি বনায়ন হলো এমন এক ধরনের চাষাবাদ পদ্ধতি যেটি বৃক্ষ চাষাবাদের বলা ও বিজ্ঞানকে নির্দেশ করে।”
ICRAF অনুসারে, “কৃষি বনায়ন হলো এমন এক ধরনের চাষাবাদ পদ্ধতি যেখানে পৃথকভাবে চাষাবাদ না করে একই সাথে সমন্বিতভাবে পশুপালন এর মত করে পাছপালা ও মাঠ ফসলির আবাদ করা হয়, যা একই সাথে দুটো সুবিধা দিতে পারে। এটি সাধারণত লতাপাতা, গুলু, উদ্ভিদ ও গাছপালার সমন্বিত চাষ করাকে বুঝায়।”
মোটকথা, কৃষি বনায়ন হলো এমন এক ধরনের বনায়ন ব্যবস্থাপনা যাতে এককভাবে নির্দিষ্ট কোনো চাষাবাদ না করে একই সাথে বিভিন্ন উদ্ভিদ, ফসল ও বৃক্ষ চাষাবাদ বা রোপণ করা যায়।
এটি আমাদের দেশে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সামাজিকভাবে এ ধরনের বনায়ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র আর এদের বেশির ভাগই গ্রামে বাস করে। তাই এদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করলে এ ধরনের বর্ণায়ন কর্মসূচিতে তারা আগ্রহী হয়ে উঠবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের দেশে সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে কৃষি বনায়নের গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষি বনায়নের মাধ্যমে মানুষের আয়ের পরিবর্তন হয়।
এতে দেশের হাজার হাজার বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বেশি থাকে তবে এ ধরনের বনায়ন আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
এজন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে। আর এ ধরনের কৃষি বনায়ন তৈরিতে সকলের মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।