বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর

বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর
বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর

বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা বিশ্লেষণ কর

  • অথবা, বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ভূমিকা : বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এদেশে অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, রাজনীতিসহ সবক্ষেত্রে বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। সমাজে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করাই এনজিওসমূহের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। 

বাংলাদেশে এনজিওর কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭০ সালের জলোচ্ছ্বাস ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা : নিম্নে বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নে এনজিওর ভূমিকা বিশ্লেষণ করা হলো :

১. দারিদ্র্য বিমোচন : এনজিওসমূহের দারিদ্র্য বিমোচন সামাজিক উন্নয়নের একটি অন্যতম প্রধান দিক। মূলত অধিকাংশ এনজিওর কার্যক্রম দারিদ্র্য বিমোচনকেন্দ্রিক। 

সাম্প্রতিককালে ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, গ্রামীণ ব্যাংক, আর ডি আর এস সংস্থাসমূহ দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়ায় তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

২. কৃষি উন্নয়ন : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি উন্নয়নে বিশেষত অপ্রচলিত অধিক উৎপাদনশীল ও লাভজনক এবং রপ্তানিমুখী কৃষি কর্মকাণ্ডে এনজিওগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ শতাধিক এনজিও কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলছে।

৩. শিক্ষাবিস্তার : বাংলাদেশের সরকার 'সবার জন্য শিক্ষা'। কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি এনজিওসমূহ এ কার্যক্রমে ভূমিকা পালন করে চলেছে। 

শিক্ষার ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করছে। নিরক্ষরতা দূরীকরণ, সামাজিক ও কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান তাদের অন্যতম কাজ ।

৪. স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ভূমিকা : স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিসহ বাংলাদেশ সরকারের সবার জন্য স্বাস্থ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এনজিও বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। 

এনজিওগুলো কুষ্ঠরোগ নিরাময়, বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান এবং মা ও শিশু সেবা প্রদানের মাধ্যমে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

৫. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি : গ্রামীণ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর বেঁচে থাকার ব্যবস্থা হিসেবে এনজিওগুলো বিভিন্ন কর্মসংস্থানমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

কৃষি উৎপাদনকে গতিশীলকরণের জন্য ঋণদান, শিক্ষা ও সচেতনমূলক অনুষ্ঠান নির্মাণ, ডেইরি, পোল্ট্রি ফিসারিজ কার্যক্রম বিস্তার ইত্যাদি ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামীণ সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এনজিওগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। পরিবর্তনশীল সমাজ, কাঠামোর সাথে সংগতি রেখে বেসরকারি সংস্থা এনজিওর ভূমিকা ক্রমেই পরিবর্তিত হচ্ছে। 

অতীতে কল্যাণমূলক ধারণার ভিত্তিতে এনজিও গঠিত হলেও বর্তমানে তা উন্নয়নমূলক ভূমিকা পালন করছে। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ