বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা কর
বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা কর |
বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আলোচনা কর
ভূমিকা : বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে জনকল্যাণমূলক সরকারের যাবতীয় কার্যাবলি সম্পাদন করা কঠিন ব্যাপার। এ রাষ্ট্রের কার্যাবলি ব্যাপক।
ফলে কেন্দ্রীভূত প্রশাসনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ক্ষমতা কেন্দ্র থেকে স্থানীয় পর্যায়ে স্থানান্তর করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
আর বিকেন্দ্রীকরণের উদ্দেশ্যই হলো। প্রশাসনিক দায়িত্ব, কর্তব্য ও কর্তৃত্বকে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছে দেও বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব যেকোনো দেশের সঠিক উন্নয়নের জন্য বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব অপরিসীম।
নিম্নে আলোচনার মাধ্যমে তা তুলে ধরা হলো :
১. কার্যভার হ্রাস : বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় প্রশাসন কিছু কাজ কেন্দ্রের হাতে রেখে বাকিগুলো আঞ্চলিক ও স্থানীয় পর্যায়ে অর্পণ করে বিধায় কেন্দ্রীয় সংস্থার কার্যভার অনেকাংশে লাঘব হয়।
২. কার্যসম্পাদনে গতিশীলতা আনয়ন : বিকেন্দ্রীকরণের ফলে যেকোনো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও যৌথ কাজ স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। ফলে সব বিষয়ের জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হতে হয় না।
৩. কার্যের গুণগতমান বৃদ্ধি : প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ব্যবস্থায় কর্ম বিভাজনের সুযোগ থাকায় দক্ষতার সাথে কার্যসম্পাদন করার সুযোগ থাকে। ফলে কাজের সুসম উন্নয়নের পাশাপাশি গুণগতমান বৃদ্ধি পায় ।
৪. জনগণের অংশগ্রহণ তথা গণতন্ত্র নিশ্চিতকরণ : এখানে জনগণ স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ ও সর্বক্ষেত্রে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয় বলে গণতন্ত্রের প্রসার বৃদ্ধিতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৫. জাতীয় রাষ্ট্রের জন্য আবশ্যক : আধুনিক রাষ্ট্রসমূহ মূলত জাতীয় রাষ্ট্র। এসব রাষ্ট্রে জনসংখ্যার আধিক্যের পাশাপাশি আয়তনও অনেক বেশি, যা এককভাবে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। হয় না। ফলে বিকেন্দ্রীকরণের পথ খুঁজতে হয়।
৬. সুসম ও বাস্তবমুখী উন্নয়ন : বিকেন্দ্রীকরণের ফলে স্থানীয় | সমস্যার বাস্তবমুখী সমাধান করা যায়। সেই সাথে কোনো বৃহৎ সংগঠনের প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সুসম উন্নয়ন সহজতর হয়।
৭. সহযোগিতা স্থাপন ও সুসম্পর্ক : কেন্দ্র থেকে আঞ্চলিক কার্যালয় ও আঞ্চলিক থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সর্বদা তথ্য ও পরামর্শ থাকায় উভয়ের মাঝে সুসম্পর্ক ও সহযোগিতা স্থাপিত হয় এছাড়াও জবাবদিহিতা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, শিক্ষার প্রসার প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব অতীব তাৎপর্য।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সুসম উন্নয়ন, উত্তম নেতৃত্ব ও জবাবদিহিতা থাকায় Dr. Ali Ahmed যথার্থই বলেন, "Development administration can not be successfully runs without decentralisation and deligation of authority."