ইতিহাসের গতিপথ অর্থনৈতিক উপাদানের দ্বারা পরিবর্তিত হয় ব্যাখ্যা কর
ইতিহাসের গতিপথ অর্থনৈতিক উপাদানের দ্বারা পরিবর্তিত হয় ব্যাখ্যা কর |
ইতিহাসের গতিপথ অর্থনৈতিক উপাদানের দ্বারা পরিবর্তিত হয় ব্যাখ্যা কর
- অথবা, মার্কসের আলোকে ঐতিহাসিক বস্তুবাদ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : উৎপাদন যন্ত্রের মালিকানা ও বন্টননীতির উপর ভিত্তি করে সমাজে বুর্জোয়া ও প্রলেতারিয়াত নামক দুটি শ্রেণির উদ্ভব ঘটেছে। সমাজের এ শ্রেণিব্যবস্থা একদিনের নয় বরং এটি ঐতিহাসিক বিবর্তনের ফসল ।
মার্কসের ঐতিহাসিক বস্তুবাদ : নিম্নে মার্কসের ঐতিহাসিক বস্তুবাদ আলোচনা করা হলো :
১. উৎপাদনের দুটি দিক : উৎপাদনের দুটি দিক রয়েছে। একটি হলো উৎপাদন শক্তি শ্রমিক ও তার ক্ষমতা এবং আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি উৎপাদন শক্তি।
দ্বিতীয়টি হলো উৎপাদন সম্পর্ক। এটি হলো উৎপাদন প্রক্রিয়ায় মানুষে মানুষে তথা শ্রেণিতে শ্রেণিতে উৎপাদনভিত্তিক পারস্পরিক সুযোগ বা সম্পর্ক ।
২. দাস সমাজ : দাস যুগে আদিম সমাজব্যবস্থা থেকে প্রাপ্ত উৎপাদন শক্তিসমূহ অধিকতর উন্নত হয়। দাসদের নিমর্মভাবে শোষণ করা হতো।
তারা ছিল সকল অধিকার বঞ্চিত। এ সমাজে দাস মালিকরা ছিল উৎপাদন যন্ত্রের মালিক। পরবর্তীতে দাস বিদ্রোহের মাধ্যমে এ সমাজ ভেঙে যায়।
৩. সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার গতিপ্রকৃতি : মার্কসের মতে উৎপাদনের উপাদানগুলো যখন যে শ্রেণির হাতে থাকে, তখন সে শ্রেণি সমাজে প্রাধান্য লাভ করে এবং সেভাবে সমাজ ও রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হয়।
৪. উৎপাদন ব্যবস্থা শ্রেণি বৈষম্য সৃষ্টি করে : উৎপাদন ব্যবস্থা সমাজকে পুঁজিবাদী ও প্রলেতারিয়েত এ দুভাগে ভাগ করে। ফলে শ্রেণিসংগ্রাম শুরু হয়ে অবশেষে বুর্জোয়াদের পতন ঘটে ।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি শ্রেণি বা শ্রেণি শোষণ ঐতিহাসিক ঘটনার ফল। মানব ইতিহাসের প্রথম থেকে সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের দ্বন্দ্ব বিরাজমান ছিল।