দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতি ব্যাখ্যা কর
দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতি ব্যাখ্যা কর |
দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতি ব্যাখ্যা কর
- অথবা, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলসূত্র বর্ণনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : বস্তু দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে অবিরতই উন্নতির দিকে চলে। বস্তুর সাহায্যে বিশ্বের সবকিছু ব্যাখ্যা করা যায় এবং এ বস্তুর গতির ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়া, ঘাতপ্রতিঘাত এর দ্বান্দ্বিক পদ্ধতির মাধ্যমে সবকিছু ব্যাখ্যা এবং আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন সাধিত হয়।
দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতি : নিম্নে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতি আলোচনা করা হলো :
১. ঐক্য ও বিরোধের সংগ্রাম : বস্তুর সমস্ত পরিবর্তন এ নিয়ম মেনে চলে। মহাশূন্যে প্রতিনিয়ত বিপরীত শক্তির আকর্ষণের ফলে নতুন নতুন তারকার জন্ম হচ্ছে এবং বিকর্ষণের ফলে তারকার মৃত্যু হচ্ছে।
জীবদেহেও দুই বিপরীত শক্তি কাজ করে। আবার একই নিয়মের বলে উৎপাদন শক্তির সাথে উৎপাদন সম্পর্কের বিরোধ ঘটলে নতুন সমাজের পতন হয় ।
২. পরিমাণগত পরিবর্তন থেকে গুণগত পরিবর্তনে উত্তরণ : বস্তুর পরিমাণগত পরিবর্তন ধীরগতির। অন্যদিকে, গুণগত পরিবর্তনে ছেদ থাকে বলে তাতে উল্লম্ফনের মাধ্যমে পরিবর্তন হয়।
মার্কসের মতে, পরিমাণগত পরিবর্তনে ছেদ ঘটলে তা উল্লম্ফনের মাধ্যমে গুণগত পরিবর্তনে রূপান্তরিত হয়। সমাজ বিকাশের ক্ষেত্রে এ সূত্রটি সমভাবে প্রযোজ্য থাকে।
শ্রমিকের আত্মশক্তি জোরদার হলে হঠাৎ করে তারা উৎপাদনের প্রতিবদ্ধকতা শোষক শ্রেণিকে উৎখাত করে সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠিত করে।
৩. নৈতিক নেতিকরণের নিয়ম : বীজ গাণিতিক মান x কে নঞর্থক করলে হবে -x। আবার একে নঞর্থক করলে হবে যা- x (− x) = x2 যা x অপেক্ষা উন্নত।
মার্কস সামাজিক মতবাদে এ নীতি প্রয়োগ করে বলেছেন যে, পুঁজিবাদ . নঞর্থক ছাড়া থাকতে পারে না। কিন্তু এ নঞর্থকতাই শেষ পর্যন্ত পুঁজিবাদকে অস্বীকার করে।
পুঁজিবাদ অধিক মুনাফার জন্য সারা পৃথিবীতে বিনিয়োগ করে শ্রমিক নিয়োগ করে। আর এ শ্রমিকরা তাদের পতন ঘটিয়ে ফেলে।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি বস্তুর পরিবর্তন যে নিয়মে হয় সে নিয়ম থেকেই দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের মূলনীতির উদ্ভব ঘটেছে । এ মূলনীতিসমূহ সকল সমাজের জন্য সমানভাবে কার্যকর।