সমাজকর্মের সাথে মনোবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলোচনা কর
সমাজকর্মের সাথে মনোবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলোচনা কর |
সমাজকর্মের সাথে মনোবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলোচনা কর
উত্তর ॥ ভূমিকা : রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব মনোবিজ্ঞান দুটি বিষয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। সমাজতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি সমস্যা জড়িত ও জটিল।
রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক : রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি আলোচিত হলো :
১. ব্যক্তিবর্গের মানসিক প্রক্রিয়ায় : মনোবিজ্ঞান ব্যক্তির আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞান ব্যক্তির রাজনৈতিক আচরণকে প্রাধান্য দেয়। আচারণবাদীরা মনে করেন গবেষণালব্ধ তথ্য ও জ্ঞান রাজনীতিকে সমৃদ্ধ করে ।
২. সমাজবদ্ধ মানুষের ক্ষেত্রে : অধ্যাপক গিডিংসের মতানুসারে মনোবিদ্যা হলো মানুষের মন এবং মানসিক সম্পর্কিত এক বিজ্ঞান। মনোবিদ্যার আলোচনায় সমাজবদ্ধ মানুষের মনোজগতের ক্রিয়াকলাপ ধরা পড়ে।
রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের বিষয় হলো সে সমাজের মানুষ। সুতরাং এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ও মনোবিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে।
৩. মনোবিজ্ঞানের উপর রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের নির্ভরশীলতা : সমাজের আন্তঃমানবিক সম্পর্কসমূহের বিজ্ঞান হলো রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ব্যক্তিবর্গের বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্ছ্বাস, অভিপ্রায়, জ্ঞান ও অন্যান্য মানসিক বৃত্তি ও অনুভূতির অনুশীলনের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা যায় না। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের সাথে মনোবিজ্ঞানের নির্ভরশীলতার সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়।
৪. রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের উপর মনোবিদ্যার নির্ভরশীলতা : রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের উপর মনোবিজ্ঞানের নির্ভরশীলতা পরিলক্ষিত হয়।
ব্যক্তির মনস্তত্ত্ব বিচারবিশ্লেষণের ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানীরা রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের ধ্যান ধারণাকে অস্বীকার বা উপেক্ষা করতে পারে না। অর্থাৎ রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বকে বাদ দিয়ে মনোবিদ্যার আলোচনা সফল ও সার্থক হতে পারে না ।
৫. মানুষের প্রকৃতির ক্ষেত্রে : অধ্যাপক বিদ্যাভূষণ ও সচদেব এ প্রসঙ্গে অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, মানুষের প্রকৃতি আচার আচারণ অনুশীলনের জন্য মনোবিজ্ঞানকে সমাজতত্ত্ব বা রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের উপর নির্ভর করতে হয়। অর্থাৎ সমাজতাত্ত্বিক ধ্যানধারণা বাদ রেখে মনোবিজ্ঞানের আলোচনা কার্যত অচল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাজনৈতিক সমাজতত্ত্বের মুখ্য বিষয় হলো সমাজ ও রাজনীতি । অপরদিকে, মনোবিদ্যার মূল্য প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ব্যক্তির মানসিক ক্রিয়াকলাপ। কাজেই রাজনৈতিক সমাজতত্ত্ব ও মনোবিদ্যার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিপন্ন হয় ।