রাজনৈতিক উন্নয়নে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ কর
রাজনৈতিক উন্নয়নে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ কর |
রাজনৈতিক উন্নয়নে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা উল্লেখ কর
উত্তর : ভূমিকা : একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূর্ত প্রতীক হচ্ছে সেনাবাহিনী। কেননা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বহীন রাষ্ট্রে কখনোই রাজনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বিশ্বায়নের এ যুগে সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক উন্নয়নের অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সামরিক বাহিনীই রাজনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে থাকে ।
রাজনৈতিক উন্নয়নে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা / অবদান : সামরিক বাহিনী তার দায়-দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রাজনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখে। নিম্নে রাজনৈতিক উন্নয়নে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা আলোচনা করা হলো :
১. শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা : সুষ্ঠু ও শান্তিময় পরিবেশ রাজনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত। দেশের অভ্যন্তরে যখনই কোন বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় তখন সামরিক বাহিনীর সদস্যরা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সক্রিয় থাকে। ফলে রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নত হয় ।
২. জাতীয় চেতনার বিকাশ : জাতীয় চেতনাবোধ সৃষ্টিতে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। জাতীয় চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশ প্রেম জন্মে। এ লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে ।
৩. রাজনৈতিক কাঠামোর উন্নয়ন : রাজনৈতিক কাঠামোর পুনর্গঠন ব্যতীত রাজনৈতিক উন্নয়ন দুরূহ। উন্নয়নশীল দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে বিদ্যমান বিভিন্ন অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি নির্মূলে সামরিক বাহিনী উদ্যোগ গ্রহণ করে । এতে রাজনৈতিক কাঠামো আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
৪. রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা : রাজনৈতিক সংকট ও শূন্যতা রাজনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এরূপ পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনী দেশের হাল ধরে দেশকে বড় বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করে ।
৫. জনঅংশগ্রহণ বৃদ্ধি : জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ব্যতীত রাজনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা রাজনৈতিক কাঠামোর পুনর্গঠন ও শান্তিশৃঙ্খলা বিধানে সদা তৎপর থাকে। ফলে রাজনীতিতে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায় ।
৬. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি রোধ : উন্নয়নশীল দেশে রাজনৈতিক উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধকতা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি। দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি রোধে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এতে রাজনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয় ।
৭. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যতীত উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর রাজনৈতিক পরিবেশ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এতে রাজনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনী বিশ্বস্ত প্রহরীর ন্যায় কাজ করে।
৮. প্রকৃত দেশপ্রেমিক : প্রকৃত দেশপ্রেম ব্যতীত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীকে আদর্শ দেশপ্রেমিক বলা যায় । কেননা তারাই দেশ ও জাতির চরম বিপর্যয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবন বাজি ধরে। তাদের এরূপ মহৎ ও ত্যাগী আদর্শ থেকে মানুষ দেশ ও জাতিকে রক্ষায় শপথ গহণ করতে পারে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যায় যে, সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম এজেন্ডা। অর্থাৎ রাজনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর অবদান বেশি হয়ে থাকে।