পরীবিবি কে ছিলেন । পরী বিবির পরিচয় দাও
পরীবিবি কে ছিলেন । পরীবিবির পরিচয় দাও |
পরীবিবি কে ছিলেন । পরীবিবির পরিচয় দাও
উত্তর : ভূমিকা : পরীবিবি ছিলেন সুবাহ বাংলার মুঘল সুবাদার শায়েস্তা খানের কন্যা এবং সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র ও ভবিষ্যৎ মুঘল সম্রাট মুহাম্মদ আজম শাহ-এর স্ত্রী। এছাড়াও তিনি মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নূরজাহানের নাতনী ।
→ পরীবিবির পরিচয় : শায়েস্তা খানের কন্যা পরীবিবির আসল নাম ইরান দুখত রহমত বানু। তবে পরীবিবি নামটিই অধিক প্রচলিত।
তিনি শায়েস্তা খানের কন্যা কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে দ্বিমত থাকলেও তিনি যে শায়েস্তা খানের কন্যা তা স্বয়ং শায়েস্তা খানের নিজের ওসিয়ত নামা থেকেই প্রমাণিত হয়।
ওসিয়তনামাটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাটরা ওয়াকফ পরিদপ্তরে এখনো সংরক্ষিত আছে। ১৬৬৮ সালের ৩ মে শাহজাদা মুহাম্মদ আজম শাহ-এর সঙ্গে পরীবিবির বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের বিয়েতে দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লক্ষ আশি হাজার টাকা। ১৬৮৪ সালে লালবাগ কেল্লার অভ্যন্তরে তার অকাল মৃত্যু ঘটে।
১৬৭৮ সালে সুবাহ বাংলার তৎকালীন সুবাদার শাহজাদা মুহাম্মদ আজম লালবাগে কেল্লার নির্মাণ শুরু করেন। তিনি বাংলার সুবাদার হিসেবে মোট ১৫. মাস ঢাকায় ছিলেন।
কিন্তু লালবাগ কেল্লার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগেই তার পিতা আওরঙ্গজেব মারাঠা বিদ্রোহ দমনের জন্য তাকে দিল্লিতে ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
এ সময়ের মধ্যে একটি দরবার হল ও একটি মসজিদ নির্মিত হয়। তারপর ১৬৮০ সালে পরীবিবির বাবা শায়েস্তা খান পুনরায় বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন।
তিনি পুনরায় দুর্গের নির্মাণকাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৬৮৪ সালে কেল্লার ভিতর শায়েস্তা খানের কন্যা ইরান দুখত রহমত বানুর (পরীবিবি) মৃত্যুর ফলে শায়েস্তা খান দুর্গটিকে অপয়া মনে করে ১৬৮৪ সালে এর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন ।
তিনি দুর্গের অভ্যন্তরে পরীবিবির সমাধির উপর একটি সুদৃশ্য সমাধি সৌধ তৈরি করেন। যা পরীবিবির মাজার হিসেবে পরিচিত।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র আজম শাহ-এর স্ত্রী পরীবিবির অকাল মৃত্যু ঘটে লালবাগ কেল্লার অভ্যন্তরে।
অহমবুরুঞ্জীতে লিপিবদ্ধ একটি পত্র থেকে শাহজাদা আজম শাহের সঙ্গে পরীবিবির সুখি দাম্পত্য জীবন, অন্তঃপুরে তার প্রভাব এবং সর্বোপরি রাজনীতিতে তো বিচক্ষণ কর্মতৎপরতার প্রমাণ পাওয়া যায় ।