পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে লিখ । পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো
পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে লিখ । পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো |
পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে লিখ । পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনা করো
- অথবা, পলাশির যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো পলাশির যুদ্ধ। পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে নবাব সিরাজ- উদ-দৌলা পরাজিত হয়।
এই পরাজয়ের মাধ্যমে ইংরেজরা বাংলার ক্ষমতা দখল করে। মীরজাফরকে পুতুল নবাব বানান ইংরেজরা। ইংরেজরা বাংলায় স্বাধীনভাবে ব্যবসা শুরু করে।
পলাশির যুদ্ধ : ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের সাথে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার সংঘর্ষের ইতিহাস এক যুগান্তকারী ঘটনা। ইংরেজরা বিনা বাধায় কলকাতা পুনরুদ্ধার করেন।
সিরাজ ইংরেজদের সাথে আমীনগরের সন্ধি নামে একটি সন্ধি স্থাপন করেন। ইতোমধ্যে কলকাতা কাউন্সিলে সিরাজকে ক্ষমতাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অতঃপর ক্লাইভও তার সৈন্য নিয়ে পলাশির প্রান্তরে এসে শিবির স্থাপন করেন। এ সংবাদে সিরাজ ১৭৫৭ সালে ২২ জুন ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে পলাশির প্রান্তরে পৌঁছলে ২৩ জুন সকাল ৮টায় বাংলার বিয়োগান্ত নাটকের শেষ অংশ শুরু হয়। মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব পরাজিত ও নিহত হন।
→ পলাশি যুদ্ধের কারণ : নিম্নে পলাশি যুদ্ধের কারণ ভুলে ধরা হলো :
১. রাজনৈতিক কারণ : নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার সিংহাসনে বসেন। এতে তার খালা ঘষেটি বেগম ও খালাতো ভাই শওকত জঙ্গ নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন।
২. অর্থনৈতিক কারণ : ইংরেজরা বাণিজ্য সংক্রান্ত যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিল তার অপব্যবহারে নবাবের অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে থাকে। অর্থনৈতিক কারণে নবাবকে ইংরেজ বিদ্রোহী করে তোলে।
৩. সিরাজ কর্তৃক কলকাতা দখল : নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলকাতা আগমন করলে ইংরেজ গভর্নর ও তার অনুসারীগণ ভীত হয়ে ফলতা নামক স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে ২০ জুন তিনি ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ দখল করেন।
৪. দপ্তকের অপব্যবহার : ইংরেজ বণিকরা দন্তকের অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে এদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। এতে নবাবের সাথে সংঘর্ষ হয়।
ফলাফল :
১. পলাশি যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের ফলে মীরজাফর ইংরেজদের তাবেদার নবাব হন।
২. সমগ্র ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনকার্যের পথ সুগম হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পলাশি যুদ্ধ বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। মীরজাফরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে নবাব সিরাজ-উদ- দৌলার বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে ইংরেজদের নিকট পরাজিত হয়। নবাবের পরাজয়ের ফলে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়।