নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থার ফলাফল সংক্ষেপে আলোচনা কর
নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থার ফলাফল সংক্ষেপে আলোচনা কর |
নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থার ফলাফল সংক্ষেপে আলোচনা কর
- অথবা, নবাব মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থার ফলাফল কি ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : মুর্শিদকুলি খানের একনিষ্ঠতা, কর্ম দক্ষতা ও আন্তরিকতার ফলে তার রাজস্ব ব্যবসা সফল হয়েছিল।
→ মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থার ফলাফল : নিম্নে এর ফলাফল আলোচনা করা হলো :
১. রাজস্বের উন্নতি সাধিত : মুর্শিদকুলি খানের মালজামিনী ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে বাংলার রাজস্বের উন্নতি হয়। এর ফলে ঘাটতি পূরণ হয়েও ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা উদ্বৃত্ত হয়। আর এ উদ্বৃত্ত রাজস্ব থেকে প্রতিবছর ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রদান করতেন।
২. দ্বৈত শাসনের অবসান : তাঁর নব প্রবর্তিত রাজস্ব ব্যবস্থার ফলে প্রজাদের উপকার হয়। কারণ ইতোপূর্বে জমিদারগণ রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রজাদের উৎপীড়ন করতো।
নতুন এ ব্যবস্থায় অতিরিক্ত কর নিষিদ্ধ থাকায় জমিদারগণ প্রজাপীড়ন করতে পারেননি। ফলে বাংলার প্রজারা দ্বৈতশাসনের মত অত্যাচার থেকে রক্ষা পায় ।
৩. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার : বাণিজ্য শুল্ক নির্দিষ্ট থাকায় মুর্শিদকুলি খানের সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয়। এর পরও মুর্শিদকুলি খান সব বেআইনি কর রদ করেন।
৪. নতুন জমিদারের সৃষ্টি : মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব নীতির ফলে অনেক পুরাতন জমিদার বিশেষত মুঘলমান জমিদার ধ্বংস হয়ে যায়। অন্যদিকে আমিন বা ইজারাদারদের সৃষ্টি করে তিনি এক নতুন শ্রেণির জমিদারী সৃষ্টি করেন ।
৫. হিন্দু-মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব : তিনি বাঙালি হিন্দুদেরকে রাজস্ব বিভাগের বিভিন্ন উচ্চপদে অধিষ্ঠিত করার ফলে তাদের মধ্য হতে এক সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয়। এ মধ্যবিত্ত শ্রেণি নবাবের অনুগত রাজা মহারাজা প্রভৃতি খেতাব লাভ করেন ৷
৬. বিবিধ : মালজামিনী প্রথায় উৎপীড়নমূলক ? নিষিদ্ধ থাকায় প্রজার রাজস্ব প্রদানের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, কৃষিক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হয় ফলে সরকারের আয় বৃদ্ধি পায় ৷
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুর্শিদকুলি খানের রাজস্ব ব্যবস্থা মুঘলবংশের অন্তিমলগ্নে ধসে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা রূপদান করতে অনেক প্রেরণার উৎস ছিল।