মারাঠাদের সাথে আলীবর্দী খানের সন্ধি স্থাপন সম্পর্কে লিখ
মারাঠাদের সাথে আলীবর্দী খানের সন্ধি স্থাপন সম্পর্কে লিখ |
মারাঠাদের সাথে আলীবর্দী খানের সন্ধি স্থাপন সম্পর্কে লিখ
- অথবা, মারাঠাদের সাথে আলীবর্দী খানের সন্ধি স্থাপন লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : অষ্টাদশ শতাব্দীর ভারতের ইতিহাসে বৈদেশিক ভাগ্যান্বেষীগণ এক গুরুত্বপূর্ণ পদে অংশগ্রহণ করেন।
এদের মধ্যে অনেকেই অতি সামান্য অবস্থা থেকে নায়েব, সুবাদার, সুবাদার, নবাব প্রভৃতি গৌরবময় পদে স্বীয় শক্তি ও সামর্থ্যেরে বলে উন্নীত হন।
এদের মধ্যে একজন হলেন মীর্জা মুহাম্মদ আলী ওরফে আলীবর্দী খান। তিনি একজন শক্তিমান শাসক ছিলেন। মারাঠাদের সাথে সংঘর্ষ তার রাজত্বকালের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় ।
→ মারাঠাদের সাথে সন্ধি স্থাপন : ১৭৪২ সাল হতে ১৭৫১ সাল পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধে মারাঠা ও আলীবর্দী খানের সৈন্যবাহিনী নাজেহাল ও রণক্লান্ত হয়ে পড়লে উভয়পক্ষ নিম্নলিখিত শর্তে সন্ধি স্থাপন করেন ১৭৫১ খ্রি. এর মে মাসে।
সন্ধির শর্তাবলি :
১. মীর হাবিব আলীবর্দী খানের অধীনে উড়িষ্যার নায়েব নাযিম থাকবেন; কিন্তু এ প্রদেশের উদ্বৃত্ত রাজস্ব মারাঠা সৈন্যদের ব্যয়ভার বাবদ রঘুজী ভোঁসলা পাবেন।
২ . চৌথ (ভূমি রাজস্বের ১/৪ অংশ) বাবদ প্রতি বছর বাংলার রাজস্ব থেকে ১২ লাখ টাকা রঘুজীকে দিতে হবে।
৩. সুবর্ণ রেখা নদী বাংলার সীমানা হিসেবে নির্ধারিত থাকবে এবং মারাঠারা কখনো এ সীমানা অতিক্রম করে বঙ্গে প্রবেশ করবে না।
৪. পাওনা আদায়ের নিশ্চয়তার জন্য মেদেনীপুর জেলার একাংশে মারাঠা সৈন্য অবস্থানের অনুমতি দিতে হবে।
এ সন্ধি স্বাক্ষরিত হওয়ার এক বছর পরেই জানোজী ভোঁসলার নেতৃত্বাধীন মারাঠা সৈন্যরা তাদের নিজস্ব লোককে উড়িষ্যার নায়েব নাযিম পদে অধিষ্ঠিত করেন ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ আগস্ট।
ফলে আলীবর্দী খান উড়িষ্যার উপর কর্তৃত্ব হারান। প্রকৃতপক্ষে উড়িষ্যা মারাঠাদের নাগপুর রাজ্যের একটি প্রদেশে পরিণত হয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উভয়পক্ষের সন্ধি স্থাপনের ফলে দেশে কিছুটা শান্তি ফিরে আসে।