বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্যের কি প্রভাব ছিল

বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্যের কি প্রভাব ছিল
বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্যের কি প্রভাব ছিল

বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্যের কি প্রভাব ছিল

  • অথবা, ইউরোপীয় বণিকগণ বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর কিরূপ প্রভাব ফেলেছিল? 

উত্তর : ভূমিকা : ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্য বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রেখেছিল। তাদের মাধ্যমে বাংলায় কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠিত হয়। 

তারা বাংলার মানুষকে শিক্ষিত করার পাশাপাশি তাদের নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন ঘটায়। বাংলার সাংস্কৃতিক প্রসারেও ইউরোপীয় বণিকগণ অসামান্য অবদান রেখেছিলেন।

→ বাংলার সামাজিক অবস্থার উপর ইউরোপীয় বণিকদের প্রভাব : নিম্নে ইউরোপীয় বণিকদের প্রভাব আলোচনা করা হলো :

১. কুসংস্কার দূরীকরণে পদক্ষেপ গ্রহণ : ইউরোপীয়দের আগমনের পূর্বে বাংলার সমাজ বিভিন্ন কুসংস্কার ও কুপ্রথা দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল। সেই সমাজে ধর্মীয় বিধিবিধানের নামে বিভিন্ন কুসংস্কার দ্বারা মানুষের প্রতি পাশবিক নির্যাতন চালানো হতো। 

উদাহরণস্বরূপ, সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, দাসপ্রথা, কন্যা সন্তান হত্যা করার কথা বলা যায়। ইউরোপীয়দের আগমনের পর থেকে এদেশীয় কিছু শিক্ষিত সমাজ এ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং তারা ইউরোপীয়দের সাহায্যে এসকল কুসংস্কার দূরীকরণের চেষ্টা চালায়। 

যেমন- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংয়ের সহযোগিতায় সতীদাহ প্রথা রোধ এবং বাল্যবিবাহ রোধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

২. শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার : ইউরোপীয় সামুদ্রিক বাণিজ্যের একটি অন্যতম ইতিবাচক প্রভাব হলো শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার। কেননা ইংরেজদের প্রবর্তিত আধুনিক ও ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের ফলে বাঙালিরা পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে। 

আর শিক্ষার উন্নয়নের সাথে সাথে বাংলার সংস্কৃতিরও উন্নয়ন ঘটতে থাকে। যার ফলে সমাজে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে ।

৩. মানুষের নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন : ইউরোপীয় তথা ব্রিটিশদের আগমনের পূর্বে বাংলার মানুষের নৈতিক চরিত্রের অভাব ছিল। তারা পতিতাবৃত্তিসহ নানা ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। 

১৮১৩ সালের পর থেকে ব্রিটিশ সরকারের শিক্ষানীতি গ্রহণের ফলে বাঙালি সমাজে আলোকবর্তিকাস্বরূপ বিভিন্ন মনীষীর আবির্ভাব ঘটে। 

আর এ সকল মনীষীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও তাঁদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের নৈতিক চরিত্রের ক্রমান্বয়ে উন্নতি ঘটে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতবর্ষে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ইংরেজরা দীর্ঘদিন এখানে বসবাসসহ বাণিজ্য পরিচালনা করে। 

তারা এখানে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশের মানুষকে শোষণ করলেও এখানকার সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল । 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ