বাংলার শক্তিশালী ও যোগ্য নবাব হিসেবে আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন সংক্ষেপে কর
বাংলার শক্তিশালী ও যোগ্য নবাব হিসেবে আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন সংক্ষেপে কর |
বাংলার শক্তিশালী ও যোগ্য নবাব হিসেবে আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন সংক্ষেপে কর
- অথবা, বাংলার শক্তিশালী ও যোগ্য নবাব হিসেবে আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন সংক্ষেপে লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে নবাব আলীবর্দী খানের শাসনকাল একটি স্মরণীয় অধ্যয়। আলীবর্দী খান “একজন অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন।
মুঘল সাম্রাজ্য যখন ভেঙে যাচ্ছিল, চারদিকে বিদ্রোহীদের বারবার আক্রমণ সে সময় তার আবির্ভাবে বাংলায় স্বস্তির ফিরে এসেছিল।
→ আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন : নিম্নে আলীবর্দী খানের মূল্যায়ন আলোচনা করা হলো :
১. বিহারের নায়েম নিযুক্তি : নবাব সুজাউদ্দিন যখন ১৭৩৩ খ্রিষ্টাব্দে বিহারের সুবাদারি লাভ করেন তখন তিনি আলীবর্দী খানকে বিহারের নায়েব পদে নিয়োগ করেন।
এ সময় বিহার প্রদেশে অশান্তি ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছিল । তিনি স্বীয় যোগ্যতাবলে সেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন ৷
২. বাংলার মসনদ অধিকার : অযোগ্য সরফরাজ খানকে পরাজিত করে আলীবর্দী খান মসনদ অধিকার করেন। বিচক্ষণ শাসক হিসেবে তিনি সাম্রাজ্যের অভূতপূর্ব সমৃদ্ধি উন্নতি আনয়ন করেছিলেন।
৩. রাজ্যশাসন : আলীবর্দী খান বাংলার মসনদে বসেন তখন তার বয়স ছিল ৬০ বছর। কিন্তু তার কর্মক্ষমতা ও নৈপুণ্য কোনো অংশে কম ছিল না। তার অসাধারণ কর্মদক্ষতায় রাজ্যে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি আনয়ন করেন।
৪. উড়িষ্যা বিজয় : নবাব সুজাউদ্দিন যখন বাংলায় সুবাদার তখন দ্বিতীয় মুর্শিদকুলি খান উড়িষ্যার নায়েব নাযিম ছিলেন।
সরফরাজ খান প্রথম মুর্শিদকুলি খানের জামাতা ছিলেন আলীবর্দী খানের সঙ্গে সংঘর্ষে সরফরাজ খান নিহত হলে মুর্শিদকুলির জামাতা মির্জা লুতফুল্লাহ স্ত্রী দুর্দানা বেগম ও জামাতা মিয়া বাকর খানের প্ররোচনায় আলীবর্দীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন।
আলীবর্দী তার বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন। দ্বিতীয় মুর্শিদকুলি পরাজিত হয়ে উড়িষ্যা ত্যাগ করেন । আলীবর্দী খান সহজেই উড়িষ্যা জয় করেন ।
৫. মারাঠা হাঙ্গামা : তার সময়ে মারাঠা আক্রমণ একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা তাদের বারবার আক্রমণে বাংলার মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে ওঠে । আলীবর্দী খান সফলভাবে তাদেরকে দমন করেন।
৬. আফগান বিদ্রোহ : আফগানরা বিদ্রোহ হয়ে ওঠলে তাদেরকে তিনি দমন করতে সমর্থ হন। তিনি সুদক্ষ শাসক ছিলেন ।
৭. ইংরেজদের সাথে সম্পর্ক : ইংরেজদের সাথে ব্যবসা- বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কঠোরনীতি অবলম্বন করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আলীবর্দী খানের প্রশানকাল সফলতায় ভরপুর। কৌশলে সকল বিদ্রোহ দমন করে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনেন।