অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে । অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে কী বুঝ
অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে । অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে কী বুঝ |
অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি কাকে বলে । অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলতে কী বুঝ
উত্তর : ভূমিকা : রাজনৈতিক আচার আচরণ, বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও দর্শনের সমষ্টিকে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বলে । রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।
রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে জনগণের সম্পৃক্ততার উপর নির্ভর করে তিন ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরাজমান। তন্মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অংশগ্রাহক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ।
অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি : অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইংরেজি প্রতিশব্দ Participant political culture। এটি হচ্ছে সর্বজনবিদিত এবং সর্বোচ্চ উন্নয়নমুখী।
যে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সরকারের গঠন ও কার্যপ্রণালি, দাবিদাওয়া, সরকারি সিদ্ধান্ত ও নিয়মনীতি এবং একজন সক্রিয় রাজনৈতিক সদস্য হিসেবে নিজের অধিকার ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতাপূর্বক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাই অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতি।
এ ব্যবস্থায় সরকার ও জনগণের মধ্যে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। এ ধরনের রাজনৈতিক কৃষ্টিতে জনসাধারণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা, কাঠামো, কার্যপ্রণালি, রাজনৈতিক ব্যবস্থার দাবিদাওয়া ও সিদ্ধান্ত গ্রহণমূলক কার্যাবলি সম্পর্কে ধারণা করে।
এরূপ অবস্থানের পাশাপাশি জনগণ রাজনৈতিক ব্যবস্থার কার্যাবলিতে অংশগ্রহণের জন্য এগিয়ে আসে। যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ।
অংশগ্রাহক রাজনৈতিক সংস্কৃতির কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নিম্নরূপ :
প্রথমত, অংশগ্রাহী রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনগণ নিজেদেরকে রাজনৈতিক ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে।
দ্বিতীয়ত, উন্নত সমাজকাঠামোতে এ ধরনের সংস্কৃতির ব্যাপক অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়।
তৃতীয়ত, সাধারণ জনগণ নিজেদের অধিকার ও দায়দায়িত্ব সম্পর্কে সদা সচেতন থাকে ৷
চতুর্থত, অংশগ্রাহক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনগণের ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা থাকায় এর মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব ।
পঞ্চমত, এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জনমতের প্রতিফলন ঘটার সুযোগ থাকে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে সর্বজনগ্রাহ্য ও সর্বোচ্চ উন্নয়নমুখী হচ্ছে অংশগ্রাহক রাজনৈতিক সংস্কৃতি।
এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সরকার ও জনগণের মধ্যে সমন্বয়সাধন করে সরকারি নীতিমালা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সকলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠে। ফলে রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব হয়।