ভক্তিবাদ আন্দোলন কি | ভক্তিবাদ আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা কর
ভক্তিবাদ আন্দোলন কি । ভক্তিবাদ আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা কর |
ভক্তিবাদ আন্দোলন কি pdf । ভক্তিবাদ আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা কর
- অথবা, ভক্তিবাদ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
- অথবা, ভক্তিবাদ আন্দোলন বলতে কী বুঝ?
উত্তর : ভূমিকা : বৃহত্তর ভারতীয় সমাজকে নাড়া দেবার জন্য যেসব আন্দোলন হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে একটি ব্যতিক্রমধর্মী আন্দোলন হচ্ছে ভক্তিবাদ আন্দোলন। সুলতানি আমলে ধর্মের ক্ষেত্রে হিন্দু-মুসলিম সংস্কৃতির পরস্পর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
ইসলামের প্রভাবে একদিকে হিন্দু সমাজের রক্ষণশীলতা ও জাতিভেদ প্রথা কঠোরতর, হয়েছিল অন্যদিকে, এর প্রভাবে 'ভক্তিবাদ' নামক উদার এক ধর্মনীতির উদ্ভব ঘটেছিল।
রামানন্দ, বল্লভাচার্য, শ্রীচৈতন্য, কবীর ও নানক প্রভৃতি ব্যক্তিরা এই আন্দোলনের প্রচারক ছিলেন। ভক্তিবাদ সম্পর্কে নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো :
ভক্তিবাদ আন্দোলন : সব ধর্মের সমতা, এক ঈশ্বর এ বিশ্বাস, ভক্তি ও প্রেমের মাধ্যমে ভগবৎ প্রাপ্ত প্রভৃতি মূলনীতির উপর ভক্তিবাদ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত। পনেরো ও ষোলো শতকে এ আন্দোলনের রূপ লাভ হয়।
কৃষ্ণভক্তিকে কেন্দ্র করে বাংলায় চৈতন্য যে ধর্মীয় আন্দোলন শুরু করেছিলেন তাকে 'ভক্তিবাদ আন্দোলন'ও বলা হয়।
ভক্তি এসেছে সংস্কৃত শব্দ 'ভজ' থেকে যার অর্থ "ঈশ্বরের প্রতি তীব্র ভক্তি"।
Encyclopeadia of Religion and Ethics -এর বর্ণনা মতে, বিশেষ্য “Bhakti” ও ক্রিয়ামূল হচ্ছে “Bhaj” হতে নিঃসৃত যার অর্থ দাঁড়ায় To Share in, To belong to, As well as to waorship. (Vol-2, p-130)
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হিন্দু সমাজের কলুষতা দূর করার জন্য এবং হিন্দু-মুসলিম সমন্বয়ের জন্য ভক্তিবাদী সাধকগণ জীবনব্যাপী কাজ করে গেছেন।
সর্বধর্মের নীতি প্রচার করে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তরিক মিলনের চেষ্টাতেই এসব সাধকগণ তাদের জীবন অতিবাহিত করেছেন।
তাদের মতে, অন্তরকে শুদ্ধ রাখা, ভগবানের প্রতি গভীর ভালোবাসা, সকল মানুষের প্রতি সমদৃষ্টি দেওয়াই ভক্তিবাদের মূলকথা।
আর তাই বলা যায় যে, ভক্তিবাদ আন্দোলন ভারতের ইতিহাসে বিশেষ করে হিন্দু সমাজের জন্য একটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংস্কারমূলক আন্দোলন ।