ত্রিশক্তি সংঘর্ষের দ্বিতীয় পর্যায় আলোচনা কর
ত্রিশক্তি সংঘর্ষের দ্বিতীয় পর্যায় আলোচনা কর |
ত্রিশক্তি সংঘর্ষের দ্বিতীয় পর্যায় আলোচনা কর
- অথবা, দ্বিতীয় পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের সংক্ষিপ্ত বিবরণী দাও ।
- অথবা, ত্রিশক্তি সংঘর্ষের দ্বিতীয় পর্যায় সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : অষ্টম শতকে শেষ দিকে কাণ্যকুঞ্জে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করলে পার্শ্ববর্তী শক্তির মধ্যে তা পূরণের জন্য ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায় এবং একই সময়ে উত্তর ভারতের গুর্জর প্রতীহার রাজা বৎসরাজ, ধর্মপাল এবং দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট রাজাগণ কনৌজ অধিকারে অগ্রসর হয়।
ফলে তিন সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইতিহাসে তাই. ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ নামে পরিচিত। এ সংঘর্ষ দুটি পর্যায়ে বিভক্ত। নিম্নে দ্বিতীয় পর্যায় সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
→ দ্বিতীয় পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ : কাণ্যকুঞ্জে ধর্মপাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেও আধিপত্য বেশি দিন ছিল না। গুর্জর প্রতীহার রাজা বৎসরাজের পুত্র দ্বিতীয় নাগভট্ট ধর্মপাল প্রতিষ্ঠিত পাল প্রতিনিধি চক্রাধকে বিতাড়িত করেন এবং কাণ্যকুঞ্জ অধিকার করেন।
ধর্মপাল নাগভট্ট এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। ফলে যুদ্ধ শুরু হয়। গোয়ালিয়র প্রান্তরে ধর্মপাল ও নাগভট্টের যুদ্ধের এবং নাগভট্টের কাছে ধর্মপাল পরাজিত হওয়ার বর্ণনা আছে।
অন্য এক ঐতিহাসিক প্রমাণে আছে যে, এ যুদ্ধ মুঙ্গের অথবা তার নিকটবর্তী কোনো স্থানে সংঘটিত হয়। অর্থাৎ পশ্চাৎ ধাবমান চক্রাধকে অনুসরণ করে দ্বিতীয় নাগভট্ট মুঙ্গের পর্যন্ত এসেছিলেন।
কিন্তু প্রতিহার রাজপুত্র দ্বিতীয় নাগভট্ট এর মধ্য ভারতে ক্ষমতা বিস্তার লাভ করার সুযোগ হয়নি। কারণ অকস্মাৎ রাষ্ট্রকূটরাজ তৃতীয় গোবিন্দ উত্তর ভারতে আগমন করেন এবং নাগভট্টকে চরমভাবে পরাজিত করেন।
এরপর ধর্মপাল ও চক্রায়ূধ গোবিন্দের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু তৃতীয় গোবিন্দ তার পিতার মতো দাক্ষিণাত্যে ফিরে যান।
ফলে ধর্মপাল আর কোনো বিপদের সম্মুখীন হননি; বরং তিনি তার সাম্রাজ্য বিস্তার অব্যাহত রেখেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ধর্মপাল ত্রিপক্ষীয়, সংঘর্ষের দুটি পর্যায়ের অন্তর্বর্তীকালে উত্তর ভারতের রাজনীতিতে স্বল্পকালের জন্য হলেও সাফল্য পেয়েছিলেন। উভয় পর্যায়ে অবশ্য ধর্মপাল খুব একটা কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি ।