সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহের পরিচয় দাও
সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহের পরিচয় দাও |
সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহের পরিচয় দাও
- অথবা, সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহ সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহ একজন প্রজাবৎসল ও দূরদর্শিতা সম্পূর্ণ শাসক ছিলেন। তিনি সিংহাসনে আরোহণ করার পর প্রথমে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার উপর অধিক গুরুত্ব দেন।
→ জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহের পরিচয় : জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহের পূর্বনাম ছিল যদু। তিনি ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহ নাম ধারণ করেন।
তার পিতার নাম ছিল রাজা। গণেশ। তিনি দিনাজপুরের ভাতুরিয়া অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর জালালউদ্দিন মাহমুদ ১৪১৮ সালে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন।
শাসক হিসেবে তিনি উদারচেতা ও নিরপেক্ষ সুলতান ছিলেন। তিনি কুলীন বংশোদ্ভূত জগদত্তের পুত্র রায় রাজ্যধরকে সেনাপতির পদে নিয়োগ দান করেন ।
সুলতান জালালউদ্দিন মাহমুদ শাহ হিন্দুদের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করেননি। অন্যদিকে একজন ধর্মান্তরিত শাসক হিসেবে বাংলায় ইসলামি শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
ফিরিশতা নিজামউদ্দিন বখশী ও গোলাম হোসেন তার সুশাসনের প্রশংসা করেছেন। রিয়াজ-উস-সালাতিন থেকে জানা যায় যে, তিনি রাজধানী পাণ্ডুয়া থেকে গৌড়ে স্থানান্তরিত করেন।
জালালউদ্দিন মাহমুদ স্ত্রী ও পুত্রসহ একলাখী সমাধি সৌধে সমাধিস্থ আছেন। তিনি একজন নিষ্ঠাবান মুঘলমান ছিলেন। জালালউদ্দিন মাহামুদ শাহ মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণ করেন এবং উলামা মাশায়েখের পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন।
তিনি তার রাজত্বের শেষ দিকে মুদ্রায় খলিফাতুল্লাহ উপাধি ধারণ করেন। জালালউদ্দিন চীন সম্রাট, পারস্য ও মিশরের সুলতান ও দামেস্কর খলিফার সাথে দূত বিনিময় করেছিলেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান জালালউদ্দিন মাহামুদ শাসক হিসেবে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন। দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় এবং বৈদেশিক কূটনৈতিক সম্পর্কের সুষ্ঠু অনুসরণে সুলতান জালালউদ্দিন মাহামুদ শাহ (১৪১৮-১৪৩১) খ্রি.) দেশ শাসনের যে সত্তার পরিচয় দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয় ।