শ্রী চন্দ্রের কৃতিত্ব আলোচনা কর
শ্রী চন্দ্রের কৃতিত্ব আলোচনা কর |
শ্রী চন্দ্রের কৃতিত্ব আলোচনা কর
- অথবা, শ্রী চন্দ্রের রাজত্বকাল সম্পর্কে আলোচনা কর।
ভূমিকা : চন্দ্রবংশীয় রাজা শ্রী চন্দ্র ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তার স্বায় যোগ্যতা ও দক্ষতার বলে চন্দ্রবংশের প্রভূত। উন্নয়ন সাধন করে।
শ্রী চন্দ্র নবম শতকের শেষ এবং দশম শতকের শুরু থেকে এগার শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দক্ষি বাংলার একজন সার্বভৌম শক্তিশালী রাজা ছিলেন।
ত্রৈলোক্যচন্দ্র চন্দ্রবংশ প্রতিষ্ঠা করে এবং শ্রী চন্দ্র চন্দ্রবংশের গৌসৰ প্ৰতিপত্তি সমুন্নত রেখে চন্দ্রবংশকে চরম উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল ।
→ শ্রী চন্দ্রের কৃতিত্ব : শ্রী চন্দ্রের কৃতিত্ব অসামাণ্য গুণের সমন্বয়ে সমন্বিত রূপ। শ্রী চন্দ্র নিজ যোগ্যতার বলে এগিয়ে গিয়েছিল নিম্নে তার কৃতিত্ব তুলে ধরা হলো :
১. শ্রী চন্দ্রের পরিচয় : সমসাময়িক প্রাপ্ত লিপি থেকে জানা যায় চন্দ্রবংশীয় প্রতিষ্ঠাতা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের সুযোগ্য পুত্র শ্রী চন্দ্র।
তিনি পিতার সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হওয়ার পর নিজ দক্ষতার বলে চন্দ্রবংশের গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি আনুমানিক ৯৩০-৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চন্দ্রবংশের শাসন ক্ষমতায় ছিলেন।
২. শ্রী চন্দ্রের চারিত্রিক গুণাবলি : তিনি চন্দ্রবংশের শ্রেষ্ঠ শাসক যেমনি তিনি কোমল ছিলেন, তেমনি আবার কঠোর ছিলেন। প্রজারঞ্জক শাসক হিসেবে তার খ্যাতি ছিল ব্যাপক।
তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তার সাম্রাজ্যকে বিস্তারের জন্য যেসব অসম্ভব কাজ ছিল তা সম্ভব করতে পারতেন। তার চরিত্রে ধর্মীয় সহনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।
৩. রাজ্য বিস্তার : তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করা। তার রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি করার জন্য তিনি পদক্ষেপ নেয়।
তার শাসন এলাকা ছিল ঢাকার মানিকগঞ্জ, ঢাকা ফরিদপুরের পদ্ম তীরবর্তী এলাকা সমতট অঞ্চল, বিক্রমপুর ছিল শ্রী চন্দ্রের রাজধানী । তিনি কামরূপ ও গৌড় অভিযান করে সীমানা বৃদ্ধির জন্য ।
৪. শ্রী চন্দ্রের গৌড় অভিযান : শ্রী চন্দ্রের রাজত্বকালের গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব হলো গৌড় অভিযান আনুমানিক ৯৫২-৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে শ্রী চন্দ্র গৌড় অভিযান করেন। গৌড় অভিযানে শ্রী চন্দ্রের সাফল্যের কথা বলা হয়েছে।
গৌড়ে তিনি সাফল্যজনক অভিযান প্রেরণ করেছিলন কিন্তু সেখানে সম্রাজ্য সীমা সম্প্রসারিত হয়েছিল কিনা জানা যায়নি, তবে সে সময় গৌড় রাজ্য শ্রী চন্দ্রের কদর রাজ্যে পরিণত হয়েছিল।
৫. শ্রী চন্দ্রের কামরূপ অভিযান : ধারণা করা হয় সিলেট- পর্যন্ত শ্রী চন্দ্রের রাজ্যসীমা বিস্তৃত ছিল। তিনি কামরূপ রাজ্যের বিরুদ্ধে বিজয়াভিযান প্রেরণ করেছিল।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে শ্রী চন্দ্রের কামরূপ বিজয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। কামরূপ বিজয়ের কালে বাংলার শৌর্যবীর্যের পরিচয় বৃদ্ধি পায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শ্রী চন্দ্র চন্দ্রবংশীয় এমন রাজা ছিলেন তিনি নিজ দক্ষতার বলে সবচেয়ে বেশি দিন চন্দ্রবংশ শাসন করে তার সময় সাম্রাজ্যে শান্তি বিরাজ করেছিল।
তিনি যেমন ছিলেন প্রজারঞ্জক তেমনি আবার ছিল কঠোর ধর্মীয় উদাসীনতা সম্পন্ন। সর্বোপরি তিনি চন্দ্রবংশের একজন উত্তম পুরুষরূপে পরিচিত একজন শাসক।