সেন শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে লিখ। সেন শাসনের তৎপর্য আলোচনা কর
সেন শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে লিখ। সেন শাসনের তৎপর্য আলোচনা কর |
সেন শাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে লিখ। সেন শাসনের তৎপর্য আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : পাল সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্তূপের উপর গড়ে উঠেছিল সেন শাসনের। সেন শাসনের উত্থানে বাংলায় একটি বড় রকমের পরিবর্তন ঘটেছিল।
বাংলার ব্যাপক অংশ নিয়ে একাদশ শতকের মাঝামাঝিতে বাংলায় সেন বংশের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। পশ্চিম ও উত্তর বাংলা হতে পালবংশের এবং দক্ষিণ ও পূর্ব বাংলা হতে বর্ম শাসনের অবসান ঘটিয়ে সেনগণ সমগ্র বাংলাদেশে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেন।
→ সেন শাসনের গুরুত্ব : পাল সাম্রাজ্যের পতনের পর বাংলায় একটি নতুন রাজবংশের উত্থান হয়। এ রাজবংশ ছিল রাজনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে উন্নত; আর এ বংশটিই হলো সেন রাজবংশ।
প্রত্যেকটি সেন রাজার অক্লান্ত পরিশ্রম ও পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দুধর্ম বাংলায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের চরম উন্নতি সাধিত হয়।
প্রত্যেক সেন রাজাগণের রাজ দরবার ছিল জ্ঞানী-গুণী, কবি, সাহিত্যিকদের দ্বারা অলংকৃত। সেন শাসন আমলের বেশ কয়েকজন কবির নাম জানা যায়।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জয়দেব, হলায়ুধ ধোয়ী, গোবধন প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গ। রাজ্যশাসন, সাম্রাজ্যবিস্তার, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ধর্মীয় আচার-আচরণ ইত্যাদিতে সেন রাজাগণের যথেষ্ট মনোযোগ ছিল।
এছাড়াও বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রেও সেন শাসকদের যথেষ্ট সুনাম ছিল'। এসব কারণে অনেকে সেন যুগকে প্রাচীন বাংলার স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করেছে। সেন রাজাগণ বাংলায় মুসলিম আক্রমণ প্রতিহত করে দীর্ঘদিন বাংলার সিংহাসনে অধিষ্ঠিত থাকেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন শাসনামল এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। কেননা সকল সেন রাজার বিচক্ষণতা, বুদ্ধিমত্তা, কূটনৈতিক জ্ঞান, সামরিক জ্ঞান প্রভৃতি কারণে বাংলায় দীর্ঘ সময় রাজত্ব করে।
সেন রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দুধর্ম প্রায় সমগ্র পৃথিবীব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে আর বাংলা সাহিত্যে সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়।