সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয় কেন
সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয় কেন |
সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলা হয় কেন
- অথবা, সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলার কারণ কী ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন শাসন আমল বিশেষ স্থান দখল করে আছে। সেন শাসনামলে প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি, সাহিত্যে ব্যাপক উৎকর্ষ সাধিত হয়, যা এ সময় রাজত্বকারী সেন শাসকদের কৃতিত্বের পরিচয় বহন করে। সেন শাসনামলে ধর্ম, শিক্ষা সাহিত্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে এক অপূর্ব পরিবর্তন হয়েছিল।
→ সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলার কারণ : নিম্নে সেন যুগকে সংস্কৃত সাহিত্যের স্বর্ণযুগ বলার কারণ আলোচনা করা হলো :
১. শিক্ষার বিকাশ : প্রাচীন বাংলায় সেন রাজাদের সহায়তায় শিক্ষার যথেষ্ট উন্নতি ঘটে। বেদ, পুরাণ, মহাভারত, রামায়ণ প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে। ফলে নারী- পুরুষ উভয়ের মধ্যে হিন্দু শাস্ত্র চর্চার আগ্রহ বেড়ে যায় ৷
২. সাহিত্যের বিকাশ : সেন শাসনামলে সাহিত্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। এ সময় কবিগণ যেসব গ্রন্থ রচনা করে তার সবই সংস্কৃত ভাষায় লেখা, যা বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডারকে শক্তিশালী করে তোলে।
৩. ভাষাতত্ত্বের বিকাশ : সেন শাসনামলে পণ্ডিতদের অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ভাষাতত্ত্বের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছিল। এ সময় কবি সাহিত্যিক ও পণ্ডিতগণ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষামূলক গ্রন্থ রচনায় উৎসাহী হয়ে ওঠে।
৪. শিল্পকলার বিকাশ : সেন যুগে শিল্পকলার যথেষ্ট বিকাশ সাধিত হয়েছিল। এ সময় স্থাপত্যে ভাস্কর্যের সাথে সাথে চিত্রশিল্পেরও উন্নতি সাধিত হয়।
৫. হিন্দুধর্মের বিকাশ : সেন শাসকগণ প্রায় সকলেই ছিল ধর্ম ভীরু। তাদের শাসন আমলে হিন্দুধর্ম ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে।
৬. স্থাপত্যশিল্প : সেন শাসনামলে স্থাপত্য শিল্পের বিশেষ বিকাশ সাধিত হয়েছিল। এ সময় বহু মন্দির, মূর্তি প্রভৃতি তৈরি করা হতো অতি যত্ন সহকারে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সেন শাসন আমল বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ শাসন আমল। সেন যুগের বাংলায় যে, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিবরণ পাই তাতে এটা আসলেই মনে করা যায় যে, সেন শাসনামল ছিল বাংলার স্বর্ণযুগ।