সেন বংশের উৎপত্তি আলোচনা কর
সেন বংশের উৎপত্তি আলোচনা কর |
সেন বংশের উৎপত্তি আলোচনা কর
- অথবা, সেন বংশের উদ্ভব সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
- অথবা, সেন বংশের উৎপত্তি সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : পাল শাসনের পতনের পর বাংলায় সেন শাসনের আবির্ভাব ঘটে। পাল শাসকের অবসানের পর বাংলার কোনো কোনো অঞ্চলে স্বাধীন রাজত্বের উত্থান ঘটলেও সারা বাংলায় একটি ব্যাপক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। একাদশ শতকের মাঝামাঝিতে প্রতিষ্ঠিত হয় শক্তিশালী সেন বংশের শাসন।
→ সেন বংশের উৎপত্তি/উদ্ভব : সেন রাজাদের আদি বাসস্থান কোথায় ছিল তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। সম্ভবত এরা ছিল বহিরাগত। অনেক বিচার-বিশ্লেষণের পর ঐতিহাসিকগণ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, সেন রাজাদের পূর্বপুরুষ দাক্ষিণাত্যের কর্ণাটকের অধিবাসী ছিলেন।
সেখান থেকে কোনো এক সময় তারা পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় ও বর্ধমান এলাকায় বসতি স্থাপন করে। কারো কারো মতে, সেনরা ব্রহ্ম ক্ষত্রিয় ছিলেন।
কারো কারো মতে, প্রথম দিকে তারা ব্রাহ্মণ ছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে, দাক্ষিণাত্যের চালুক্য রাজা ষষ্ঠ বিক্রমাধিত্য চালুক্য বাহিনীর সাথে সেন বংশ বাংলায় আসে।
আবার অনেকের মতে, রাজা রাজেন্দ্র চোলের বাংলা অভিযানের বাহিনীর সাথে সেন বংশের আদি পুরুষরা বাংলায় আসে।
ঐতিহাসিকদের মধ্যে কেউ কেউ এ ধারণাও করেন যে, ভারতের মহীশূর হতে সেনরা বাংলায় আসে। পুরাণে উল্লেখ আছে যে, সেনদের আদি পুরুষের নাম ছিল বীর সেন।
সেন বংশীয় লোকেরা প্রথমে পাল রাজাদের অধীনে উচ্চপদস্থ পদে কাজ করতেন। এরা যুদ্ধবিদ্যায়ও পারদর্শী ছিলেন।এক সময় বাংলার উত্তরাংশে সামন্তরা বিদ্রোহ করলে পাল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে।
সে দুর্বলতার সুযোগে বিজয় সেন সেন সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন। ধীরে ধীরে সেন বংশ সমগ্র বাংলায় তাদের আধিপত্য বিস্তার করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সেন বংশের মাধ্যমে পালবংশের শাসনের পতন হয় এবং নতুন শাসনের আবির্ভাব হয়। এ কারণে সেন বংশ ইতিহাসবিদদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
শেষাবধি সেন বংশের আদিবাস বা উৎপত্তি স্থান সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি।