সেন বংশের ধর্ম বিষয়ক সংস্কৃত সাহিত্যগুলোর বর্ণনা দাও
সেন বংশের ধর্ম বিষয়ক সংস্কৃত সাহিত্যগুলোর বর্ণনা দাও |
সেন বংশের ধর্ম বিষয়ক সংস্কৃত সাহিত্যগুলোর বর্ণনা দাও
- অথবা, সেন বংশের ধর্ম বিষয়ক সংস্কৃত সাহিত্যগুলোর সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে সেন বংশ ছিল ধর্মীয় ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগামী যা সম্ভব হয়েছে সেন রাজাদের ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষকতার জন্য।
অধিকাংশ সেন শাসক নিজে এবং লেখক নিয়োগ করে বিভিন্ন সাহিত্য রচনা করতো। তাদের এসব লেখনির বেশির ভাগই ছিল সংস্কৃত ভাষায় লেখা। যার কারণে বলা হয় সেন যুগ ছিল সংস্কৃত সাহিত্যের এক অবাধ লীলাভূমি।
নিম্নে প্রশ্নালোকে আলোচনা করা হলো :
→ ধর্মবিষয়ক সংস্কৃত সাহিত্য : সেন বংশের সকল শাসকগণ নিয়মিত শাস্ত্র চর্চা ও অনুশীলন করতো। তাদের আম্ভরিক পৃষ্ঠপোষকতায় এ সময়ে সুবিখ্যাত কিছু সংস্কৃত ধর্মশাস্ত্র লিপিবদ্ধ হয়েছিল।
নিম্নে কয়েকটি সংস্কৃত সাহিত্যের উল্লেখ করা হলো :
১. দানসাগর ও অদ্ভুতসাগর : সেন রাজা বল্লাল সেন সংস্কৃত ভাষায় এ দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। এতে হিন্দু ধর্মের আচার-আচরণ রীতিনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।
২. হুলাহুদ রচিত গ্রন্থ : লক্ষ্মণ সেনের প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষায় গ্রন্থ রচনা করেন এর মধ্যে মীমাংসা সর্বস্ব, বৈষ্ণব সর্বস্ব, ও পণ্ডিত সর্বস্ব নামে গ্রন্থ রচনা করেন ।
৩. অদ্ভুতসাগর গ্রন্থ : অদ্ভুতসাগর গ্রন্থটি প্রথমে রচনা করেন। বল্লাল সেন। তিনি এর পুরোপুরি শেষ না করেই মৃত্যুবরণ করেন। তারপর এর শেষ করেন তার পুত্র লক্ষ্মণ সেন। এছাড়া তিনি অনেক শ্লোক রচনা করেন।
৪. অনিরুদ্ধ ভট্ট রচিত গ্রন্থ : সেনরাজ বল্লাল সেনের ধর্ম। গুরু অনিরুদ্ধ ভট্ট রচিত গ্রন্থ, হরতাল ও পিতৃদয়িতা গ্রন্থে হিন্দুধর্ম নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এসব সংস্কৃত সাহিত্য সেন যুগের ধর্মবিষয়ক পরিচয় বহন করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সেন আমল ছিল সংস্কৃত সাহিত্য চর্চার এক অভয়ারণ্য। এ সময় রচিত প্রায় সকল ধর্মবিষয়ক গ্রন্থই সংস্কৃত ভাষায় রচিত হতো। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, সেন রাজাগণ ছিলেন শিক্ষা-সংস্কৃতির পরম পৃষ্ঠপোষক।