শান্তিদেব সম্পর্কে যা জান লিখ। শান্তিদেব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
শান্তিদেব সম্পর্কে যা জান লিখ। শান্তিদেব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর |
শান্তিদেব সম্পর্কে যা জান লিখ। শান্তিদেব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : নবম শতকে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় হরিকেল অঞ্চলে কয়েকজন স্বাধীন রাজার শাসনের প্রমাণ পাওয়া যায়। শ্রী কান্তিদেব নামে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় আরও একজন রাজা রাজত্ব করতেন।
চট্টগ্রামে প্রাপ্ত তাম্রশাসনে শ্রী কান্তিদেব, তার পিতা ধনদত্ত ও পিতামহ ভদ্রদত্তের নাম পাওয়া যায়। লিপিতত্ত্ব বিচারে শ্রী কান্তি দেবের তাম্রশাসনকে নবম শতাব্দীর বলে অভিমত প্রদান করেন।
→ শ্রী শান্তিদেব : মহারাজাধিরাজ শান্তিদেব হরিকেলে রাজত্ব করতেন এবং তাঁর রাজধানীর নাম ছিল বর্ধমানপুর। কান্তি দেব বৌদ্ধধর্মের অনুসারী ছিলেন। তবে তাঁর বা তাঁর বংশের বিস্তারিত ইতিহাস জানার কোনো উপায় নেই।
শান্তিদেব সম্পূর্ণ রাজকীয় উপাধি ধারণ করেছিলেন, তিনি রাজত্বের উত্তরাধিকার তার মাতার পিতার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। বলে ধারণা করা হয়।
কারণ তাঁর মাতা 'বিন্দুবতীকে মহারাজার কন্যা' বলা হয়েছে। নবম শতকে অর্থাৎ দেব রাজবংশের পরবর্তীকালে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার হরিকেল অঞ্চলে কান্তিদেবের শাসন বেশ কিছু এলাকায় বিস্তৃত হয়েছিল।
কান্তিদেবের রাজ্য কোথায় ও কতদূর বিস্তৃত হয়েছিল তা সঠিকভাবে বলা যায় না কারণ হরিকেলের সঠিক সীমানা নির্দিষ্ট করা কঠিন।
তবে ঐতিহাসিক তত্ত্ব বিচারে বলা যায় যে, কান্তিদেব দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গের কোনো অংশবিশেষে রাজত্ব করতেন। কান্তিদেবের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের অংশ বিশেষে বিস্তৃত ছিল।
কান্তিদেব বা তাঁর উত্তরাধিকারীদের পর দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় প্রবল পরাক্রমশালী চন্দ্রবংশের উদ্ভব হয়। হরিকেল রাজাদের হাত থেকেই চন্দ্রবংশ ক্ষমতা অধিকার করে বলে ধরাণা করা হয়।
সুতরাং বলা যায় যে, দেব রাজবংশ ও চন্দ্র রাজবংশের মধ্যবর্তী সময়ে নবম শতাব্দীতে কান্তিদেব ও তাঁর বংশধরগণ দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় রাজত্ব করেন ।
উপসংহার : ড. রমেশচন্দ্রের মতে, কান্তিদেবের পিতা এক শক্তিশালী রাজার বিন্দুবতি নামী কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন আর এর ফলে কান্তিদেব তার নানার সম্পত্তি লাভের মাধ্যমে জমিদারি কায়েম করেন। বর্তমান সময়কাল সিলেট এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে তার রাজসীমা বিস্তৃত ছিল বলে জানা যায় ।