সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বল্লাল সেনের অবদান আলোচনা কর
সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বল্লাল সেনের অবদান আলোচনা কর |
সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বল্লাল সেনের অবদান আলোচনা কর
- অথবা, বল্লাল সেনের সাহিত্যচর্চার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা পাও
- অথবা, বল্লাল সেন সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কি-না লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : বিজয় সেনের পুত্র বল্লাল সেন আনুমানিক ১১৬০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। সেন রাজাগণ তাদের শক্তিসত্তা, শাসন, প্রতিভা প্রভৃতির পরিচয় দিয়ে ভারতীয় রাজন্যবর্গের মধ্যে অভিজাত্যের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন।
বল্লাল সেন বিজ্ঞান ও বিদ্যাৎসাহী রাজা ছিলেন। তিনি রাজ্যবিস্তারের চেয়ে অভ্যন্তরীণ পুনরুজ্জীবনের কাজে অধিকতর মনোযোগী ছিলেন।
→ সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক : বল্লাল সেন একজন সুপণ্ডিত, বিদ্যোৎসাহী ও বিধান রাজা হিসেবে সমাদৃত হন। নানান শাস্ত্রে পারদর্শী অনিরুদ্ধ ভট্ট তার গুরু ছিলেন।
তিনি ব্রতসাগর, আচারসাগর, প্রতিষ্ঠাসাগর, দানসাগর ও অদ্ভুতসাগর নামে পাঁচটি গ্রন্থ রচনা করে পণ্ডিত মহলে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
তবে ব্রতসাগর, আচারসাগর ও প্রতিষ্ঠাসাগর আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। অপর দিকে দুটি গ্রন্থ আবিষ্কৃত হয়েছে।
কথিত আছে, বল্লাল সেন গুরু অনিরুদ্ধ ভট্টের নির্দেশে দানসাগর রচনা করেন । তিনি ১১৬৮ খ্রিষ্টাব্দে অদ্ভুতসাগর গ্রন্থ রচনা আরম্ভ করেন।
কিন্তু এ গ্রন্থ তিনি শেষ করতে পারেননি। তাঁর পুত্র লক্ষ্মণ সেন এ গ্রন্থ রচনা শেষ করেছিলন। অদ্ভুতসাগর গ্রন্থ গ্রহে, তারা, ঝড়, বিদ্যুৎ, ভূমিকম্প প্রভৃতি সম্বন্ধে আলোচনা আছে ।
পরম শ্রদ্ধেয় গুরু অনিরুদ্ধ ভট্টের কাছে বল্লাল সেন বেদ, পুরাণ, স্মৃতি প্রভৃতি শাস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেন। সাহিত্যানুরাগী বল্লাল সেন একটি গ্রন্থাগার স্থাপন করেন, যা তার রাজত্বের পরে জ্ঞান বিতরণে অবদান রাখে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বল্লাল সেনের সাহিত্য অনুরাগ ছিল অপরিসীম। তিনি খুব সম্ভবত গোবিন্দপালকে পরাজিত করে পূর্ব মগধাঞ্চল জয় করেছিলেন।
এতে প্রমাণিত হয় যে, তিনি দুর্বলমন্য ছিলেন না। তবে তিনি প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে জ্ঞানী ও পণ্ডিত হিসেবেই চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ।