রোহিতাগিরির শনাক্তকরণ সম্পর্কে যা জান লিখ
রোহিতাগিরির শনাক্তকরণ সম্পর্কে যা জান লিখ |
রোহিতাগিরির শনাক্তকরণ সম্পর্কে যা জান লিখ
- অথবা, রোহিতাগিরির শনাক্তকরণ সম্পর্কে একটি টীকা লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার উল্লেখযোগ্য রাজবংশ ছিল চন্দ্রবংশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত তাম্রশাসনসমূহ হতে বর্তমানে চন্দ্রবংশের ইতিহাস পুনর্গঠন করা সম্ভব।
আর তা থেকেই জানা যায় তার পুত্র সুবর্ণচন্দ্র রোহিতাগিরিতে রাজত্ব করতেন। তবে এ রোহিতাগিরি শনাক্তকরণ নিয়ে পণ্ডিতগণের মধ্যে বিভিন্ন মতো বিরোধ লক্ষ করা যায়।
[] রোহিতাগিরি শনাক্তকরণ : চন্দ্রবংশীয় তাম্রশাসনগুলোতে এই বংশের প্রথম শাসক হিসেবে পূর্বচন্দ্রকেই রোহিতাগিরির প্রথম ভূ-স্বামী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু এই রোহিভাগিরি শনাক্তকরণ সম্বন্ধে ঐহিসাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ লক্ষ করা যায়। এরমধ্যে অনেকেই রোহিতাগিরিকে বিহারের রোহতাসগড় বলে অভিহিত করেন।
তবে নলিকীকান্ত ভট্টশালীর মতবাদ এক্ষেত্রে অধিক যুক্তিযুক্ত। তার মতে, রোহিতাগিরি কুমিল্লা লালমাই পাহাড়ে অবস্থিত ছিল। খুব সম্ভবত কুমিল্লার লালমাই অঞ্চলেই চন্দ্রবংশীয় রাজারা প্রাথমিক পর্যায়ে ভূ-স্বামী ছিলেন।
ক্রমেই তাদের অবস্থার উন্নতি হয় যে কারণে ত্রৈলোক্যচন্দ্র এতো বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেন যে তিনি নিজেকে হরিকেল রাজ্যের অধীন সামন্তরাজা থেকে সার্বভৌম রাজা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। আর এ হরিকেল ছিল সিলেটের পূর্বনাম।
অন্যভাবে বলা যায় যে, চন্দ্র বংশীয় মুদ্রার ভিত্তিতে অনুমান করা যায় যে এই বংশের রাজাদের সহিত আরাকানের চন্দ্র বংশীয় রাজাদের সম্পর্ক ছিল।
যার প্রমাণ আরাকান রাজাদের প্রভাব দেখে। সুতরাং আরাকানের চন্দ্র বংশীয় কোনো রাজা কুমিল্লা অঞ্চলের ভূ-স্বামী হয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে এ বংশেরই একজন রাজা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
এটাই স্বাভাবিক। উল্লিখিত এ সকল উৎসের ভিত্তিতে এটা অনুমান করা হয় যে, কুমিল্লা অঞ্চলেই রোহিতাগিরির অবস্থান ছিল।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, রোহিতাগিরির শনাক্তকরণ নিয়ে ঐতিহাসিকগণই দ্বিধাবিভক্ত যে কারণে এর সঠিক শনাক্তকরণ অনেক কঠিন ব্যপার। তাছাড়া তাম্রশাসন ও মুদ্রার তথ্যের ভিন্নতা এ জটিলতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।