প্রথম পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ সম্বন্ধে আলোচনা কর
প্রথম পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ সম্বন্ধে আলোচনা কর |
প্রথম পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ সম্বন্ধে আলোচনা কর
- অথবা, ত্রিশক্তি সংঘর্ষের প্রথম পর্যায় সম্পর্কে যা জান লিখ।
- অথবা, উত্তর ভারতে ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষের প্রথম পর্যায় সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : পালবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ধর্মপালের শাসন আমলে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো ত্রিপক্ষীয় বা ত্রিশক্তি সংঘর্ষ।
ধর্মপাল, ভারতের গুর্জর প্রতীহার রাজবংশ ও দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট রাজবংশের মধ্যে যে সংঘর্ষ সংঘটিত হয় ইতিহাসে তাই ত্রিপক্ষীয় বা ত্রিশক্তি সংঘর্ষ নামে পরিচিত।
→ প্রথম পর্যায়ের ত্রিশক্তি বা ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষ : অষ্টম শতাব্দীর শেষ ভাগে (৭৯০ খ্রি.) ধর্মপাল ও প্রতীহার রাজা বৎসরাজ-এর মধ্যে প্রথম সংঘর্ষ হয়। যে সময়ে ধর্মপাল পশ্চিম দিকে বিজয়াভিযান শুরু করেন।
একই সময় প্রতীহার রাজা বৎসরাজ ও মধ্যদেশে সাম্রাজ্য স্থাপনের জন্য পূর্বদিকে অগ্রসর হন। কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লালসায় উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং ধর্মপাল এই যুদ্ধে পরাজিত হন।
বৎসরাজ কর্তৃক মধ্যদেশ অধিকার করার আগেই দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুবধারাবর্ষ |আর্যাবর্তে বিজয়াভিযান প্রেরণ করেন। ধ্রুব প্রথমে ধর্ম পাল এবং পরে বৎসরাজকে পরাভূত করেন।
বৎসরাজ ও ধ্রুব এর মধ্যে সংঘর্ষের সুযোগে ধর্মপাল মগধ, বারানসি ও প্রাগ দখল করেন এবং ধ্রুব আবার ধর্মপালকে পরাভূত করেন, কিন্তু বিজয় সংরক্ষণ না করেই দাক্ষিণাত্যে ফিরে যান।
তখন ধর্মপাল পরাজিত হয়েও আর্যাবর্তে সাম্রাজ্য বিস্তার অব্যাহত রাখেন। শুধু তাই নয় তিনি কনৌজ বা কাণ্যকুঞ্জের দিকেও অগ্রসর হন। কাণ্যকুঞ্জে ধর্ম পাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়েছিলেন।
নারায়ণ পালের ভাগলপুর তাম্রলিপিতে তার প্রমাণ মেলে। ভাগলপুর তাম্রলিপি অনুসারে, “ধর্মপাল ইন্দ্ররাজকে পরাজিত করে কাণ্যকুঞ্জ অধিকার করেন এবং চক্রাধকে শাসনভার অর্পণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সম্রাট ধর্মাপাল দীর্ঘ চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন।
ত্রিপক্ষীয় বা ত্রিশক্তি সংঘর্ষে ধর্মপাল কিছুটা হলেও রাজ্য বিস্তার করতে সফল হয়েছিলেন। তাই এ কথা বলা যায়, প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে ধর্মপালের ভূমিকা অপরিসীম।