প্রথম মহীপালকে পাল বংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কেন
প্রথম মহীপালকে পাল বংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কেন |
প্রথম মহীপালকে পাল বংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় কেন
- অথবা, রাজা প্রথম মহীপালকে পালবংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলার কারণ সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর : ভূমিকা : দ্বিতীয় বিগ্রহপালের মৃত্যুর পর তার পুত্র প্রথম মহীপালের সিংহাসন আরোহণ ছিল বাংলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
পাল সাম্রাজ্যের আসন্ন বিলুপ্তির থেকে রক্ষা, সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা, সাম্রাজ্য বিস্তার প্রভৃতির মাধ্যমে প্রথম মহীপাল বাংলায় পাল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে পাল সাম্রাজ্যের হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
→ প্রথম মহীপালকে পালবংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলার কারণ : প্রথম মহীপালকে পালবংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলার কারণসমূহ নিম্নে আলোকপাত করা হলো -
১. মিথিলা অধিকার : পাল রাজ্যের সীমানা বঙ্গদেশের পূর্ব সীমান্ত থেকে বারানসি পর্যন্ত বিস্তার সাধন করে প্রথম মহীপাল অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে মিথিলা অধিকার করে স্বীয় শৌর্যবীর্যের পরিচয় দেন ।
২. উত্তরবঙ্গে শাসন কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা : প্রথম মহীপালের রাজত্বকালের পঞ্চম বছরে উত্তরবঙ্গ তার শাসন কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন । তার নবম বছরে উৎকীর্ণ বানগড় লিপি থেকে প্রমাণিত হয়। যে, এ সময়ে উত্তরবঙ্গ প্রথম মহীপালের অধিকারে ছিল।
৩. দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় রাজ্য বিস্তার : প্রথম মহীপাল উত্তরবঙ্গে স্বীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর অতি অল্প সময়ের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে প্রথম পাল শাসনের ভিত মজবুত করেন।
৪. সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা : পাল রাজা প্রথম মহীপাল শুধু পিতৃসাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার এবং সাম্রাজ্য বিস্তারে নিজেকে নিয়োজিত রাখেননি। তিনি সাম্রাজ্য সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করেন।
৫. ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা : প্রথম মহীপালের শাসনামলে দেশের ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলেই ন্যায়বিচারের সুফল ভোগ করতো। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রথম মহীপাল পাল। শাসনকে সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করেন।
৬. মন্দির নির্মাণ ও সংস্কার সাধন : প্রথম মহীপালের আদেশে তার অনুজ শ্রীমান স্থিরপাল ও বসন্তপাল কর্তৃক নতুন নতুন মন্দির নির্মাণ ও পুরাতন মন্দির সংস্কার সাধিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পাল শাসনের চরম দুর্দিনে ক্ষমতায় আরোহণ করে অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে প্রথম মহীপাল পাল সাম্রাজ্যের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করেন।
একজন মহাপরাক্রমশালী রাজার আক্রমণ থেকে বাংলায় পাল শাসনাধীন অধিকাংশ অঞ্চল রক্ষা করতে তিনি সক্ষম হন।